সিরিয়া ও রাশিয়ার যুদ্ধবিমান বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে আলেপ্পোর শহরতলিতে হামলা চালিয়েছে। সিরিয়ার সামরিক বাহিনীর সূত্রগুলো এ খবর জানিয়েছে।
এর আগে শুক্রবার এক আকস্মিক হামলার মাধ্যমে সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের শহর আলেপ্পোর প্রাণকেন্দ্রে ঢুকে পড়ে বিদ্রোহীরা। ফলে প্রায় নিয়ন্ত্রণে আসা সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়।
গতকাল হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) ও তার অনুগত কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠী আলেপ্পোতে হামলা চালায়। এতে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের জন্য কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা দেশটির গৃহযুদ্ধ ২০২০ সাল থেকে মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছিল আসাদ সরকার।
সিরিয়ার সিভিল ডিফেন্স দেশটির বিদ্রোহী অধিকৃত এলাকায় উদ্ধার কাজ পরিচালনা করে। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জানিয়েছে, সিরিয়া সরকার ও রাশিয়ার বিমান বিদ্রোহী অধিকৃত আবাসিক এলাকা, একটি টহল ফাঁড়ি এবং একটি স্কুলে বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে চারজন সাধারণ মানুষ নিহত ও ছয়জন আহত হয়েছেন।
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে আসাদ সরকারকে সহায়তা করতে ২০১৫ সাল থেকে দেশটিতে বিমানবাহিনী মোতায়েন করে রাশিয়া। বিদ্রোহীরা আলেপ্পোতে ঢুকে পড়ার পর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সিরিয়ায় অতিরিক্ত সামরিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে মস্কো। তবে এখন পর্যন্ত এসব সহায়তা পৌঁছেছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এইচটিএস ও তার অনুগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো গত বুধবার একজোট হয়ে আলেপ্পোতে অনুপ্রবেশ শুরু করে। এসব বিদ্রোহীর মধ্যে তুরস্কের সহায়তাপুষ্ট গোষ্ঠীও রয়েছে। শুক্রবার বিদ্রোহীরা আলেপ্পোর বিভিন্ন বসতি দিয়ে শহরটির প্রাণকেন্দ্রে ঢুকে পড়ার কথা দাবি করে।
বিদ্রোহীরা আকস্মিকভাবে ঢুকে পড়ায় আজ শনিবার আলেপ্পোর বিমানবন্দর বন্ধে করে দিয়েছে সিরিয়ার সরকার। শহরটির যেসব স্থানে বিদ্রোহীরা ঢুকে পড়েছে, সেখান থেকে সেনাদের ‘নিরাপদে সরে যেতে’ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সিরিয়া সেনাবাহিনীর তিনটি সূত্র।
রাশিয়ার বিমানবাহিনী ও ইরানের সহায়তাপুষ্ট শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলার সহায়তায় আসাদ সরকার ২০১৬ সালে আলেপ্পোর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল। কয়েক মাসের বোমাবর্ষণ ও অবরোধের পর তখন বিদ্রোহীরা নিজেদের প্রত্যাহার করে নিতে সম্মত হয়েছিল।
আলেপ্পোর নিকটবর্তী ইদলিব প্রদেশ ও তুরস্ক সীমান্তবর্তী কিছু এলাকায় বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণ ছিল।
সিরিয়ায় ২০১১ সালে গণতন্ত্রের দাবিতে শুরু হওয়া শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে সরকার দমন-পীড়ন চালালে তা গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়। এর পর থেকে এই লড়াইয়ে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।