ইরাকের কুর্দি অঞ্চলে ইরানের হামলা, নিহত ১৩

ইরাকে কুর্দি যোদ্ধাদের অবস্থান লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় ইরানের বিপ্লবী গার্ডস বাহিনী
ছবি: রয়টার্স

ইরাকের কুর্দি অঞ্চলে হামলা চালিয়েছে ইরানের বিপ্লবী গার্ডস বাহিনী। গতকাল বুধবার কুর্দি যোদ্ধাদের অবস্থান লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানো হয়। এ হামলায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। খবর রয়টার্সের। 

বর্তমানে সহিংস বিক্ষোভে উত্তাল ইরান। দেশটির কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, এই অস্থিরতার পেছনে ইরানের ভিন্নমতাবলম্বী সশস্ত্র কুর্দিদের যোগসাজশ রয়েছে। বিশেষ করে, দেশটির এক কোটির বেশি কুর্দি জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বসবাস করে। এমন অভিযোগের পরই ওই হামলা চালানো হয়। 

কুর্দিস্তানের কাউন্টার টেররিজম বিভাগের উদ্ধৃতি দিয়ে ইরাকের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানায়, ইরাকের কুর্দিস্তানের এরবিল ও সুলাইমানিয়ার কাছে চালানো হামলায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হন ৫৮ জন। 

ইরাকের কুর্দি সূত্রগুলো জানায়, গতকাল সকালে ইরাকের কুর্দিস্তানের সুলাইমানিয়ার কাছে ইরানি কুর্দিদের অন্তত ১০টি ঘাঁটি লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালানো হয়। তবে হতাহত হওয়ার বিষয়ে সূত্রগুলো বিস্তারিত কিছু বলেনি। 

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড জানিয়েছে, এরবিলের দিকে যাওয়ার পথে গতকাল ইরানের একটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে তাদের বাহিনী। ড্রোনটি ওই অঞ্চলে থাকা মার্কিন বাহিনীর জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছিল বলে দাবি করেছে সেন্ট্রাল কমান্ড। 

এক বিবৃতিতে বাহিনীর পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ‘হামলার কারণে মার্কিন বাহিনীর কেউ হতাহত হননি এবং যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সরঞ্জামেরও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’ 

ইরানের কুর্দিবিরোধী দল কোমালার একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য রয়টার্সকে বলেছেন, তাঁদের কয়েকটি কার্যালয়েও হামলা চালানো হয়েছে। 

কুর্দি শহর কোয়ের মেয়র তারিক হায়দারি বলেছেন, হামলায় অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১২ জন। আহত ব্যক্তিদের কয়েকজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দ্রুত এরবিলের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। 

আরও পড়ুন

হামলার পর ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ওই অঞ্চলের কথিত সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে তারা হামলা অব্যাহত রাখবে। 

অন্যদিকে, হামলার নিন্দা জানিয়েছে ইরাক। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইরাকি ভূখণ্ডে হামলার বিষয়ে আপত্তি জানাতে ইরানের রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হবে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বলে মনে করে ইরাক। 

চলতি মাসে পুলিশি হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যু ঘিরে ইরানে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ২২ বছর বয়সী এই তরুণী উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় কুর্দি শহর সাকেজের বাসিন্দা ছিলেন। 

‘অনুপযুক্ত পোশাক’ পরিধান ও ঠিকমতো হিজাব না পরার অভিযোগে ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানী তেহরানে মাসাকে গ্রেপ্তার করে ইরানের নৈতিকতা পুলিশ। তিন দিন সংজ্ঞাহীন থাকার পর হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন