হয়তো মেয়েকে জড়িয়ে সাহস দিতে চেয়েছিলেন ইরানি মা, তখনই পড়ল ইসরায়েলি বোমা
১৭ বছর বয়সী কিশোরী মেয়েকে বাসায় রেখে কাজে যেতেন ইরানি মা তাবাসসুম পাক। ইসরায়েলের চালানো বোমা ও বিমান হামলার শব্দে ভয় পেত মেয়ে। এ কারণে ১৫ জুন কাজ শেষে দ্রুত বাসায় ফিরছিলেন ৪৫ বছর বয়সী তাবাসসুম। হয়তো ভেবেছিলেন, বাসায় ফিরে মেয়েকে জড়িয়ে ধরে বলবেন, যুদ্ধের শব্দে ভয় পেয়ো না। সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু তা আর হলো না। বাসায় ফেরার পথে ইসরায়েলি হামলায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
১৫ জুন রাজধানী তেহরানের সাবুনচি স্ট্রিট–সংলগ্ন নিজের বাসার কাছেই ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন তাবাসসুম।
সংবাদ সংস্থা রোকনা বলেছে, বাসায় ফেরার আগে তাবাসসুম তাঁর এক স্বজনকে ফোনে জানিয়েছিলেন, তিনি বাসার দিকে রওনা দিয়েছেন। তাই দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। এর পর থেকে তিনি আর ফোন ধরেননি।
তাবাসসুমের স্বজন সারা বলেন, বারবার ফোন করে সাড়া না পাওয়ায় তাঁর ভাই মুঠোফোনে লোকেশন ট্র্যাক করে দেখেন, তাঁদের বাসার পাশের গলিতে তাবাসসুমের গাড়ি থেমে আছে। পরে পরিবারের সদস্যরা সেখানে গিয়ে দেখেন, বোমার আঘাতে ভবনের ধ্বংসাবশেষের নিচে তাঁর গাড়ি আটকে আছে।
১৫ জুন প্রথম দিকের উদ্ধার হওয়া নিহত মানুষের মধ্যে একজন। তাবাসসুম সেদিন ওই গলি ধরে পার্কিংয়ের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। যেন গাড়ি দ্রুত পার্ক করে তিনি মেয়ের কাছে যেতে পারেন।
সারার ভাষ্য, ১৫ থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত তাঁর পরিবার হাসপাতাল ও কাহরিজাকের ফরেনসিক ভবনে তাবাসসুমের মরদেহ খুঁজেছে। শেষ পর্যন্ত ১৭ জুন কাহরিজাকেই তাঁর মরদেহ শনাক্ত করা হয়।
ইরান সরকারের মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানির বলেন, ইসরায়েলি হামলায় নিহত হওয়া অন্তত ৩০ জন নারী ও শিশুর মধ্যে তাবাসসুম একজন।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৮ জুন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ২২৪ জন নিহত ও ১ হাজার ২৭৭ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১২০ জনই নারী ও শিশু।