সৌদি আরবে এক দিনে সাতজনের শিরশ্ছেদ

সৌদি আরবের পতাকাছবি: রয়টার্স ফাইল ছবি

সৌদি আরবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার সাতজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এটি ২০২২ সালের মার্চের পর দেশটিতে এক দিনে সর্বোচ্চসংখ্যক মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘটনা। ওই মাসে এক দিনে ৮১ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল।

সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি বলেছে, সন্ত্রাসী সংগঠন গড়ে তোলা ও এগুলোকে অর্থায়নের দায়ে ওই সাতজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর একটি সৌদি আরব। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক হিসাবে দেখা গেছে, চলতি বছর এ পর্যন্ত সৌদি আরবে ২৯ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ২০২৩ সালে দেশটিতে ১৭০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল।

সৌদি আরবে শিরশ্ছেদের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়ে থাকে। প্রায় দুই বছর আগে দেশটিতে এক দিনে ৮১ জনের শিরশ্ছেদের ঘটনায় বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল।

গতকাল যে সাতজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, তাঁদের জাতীয়তা প্রকাশ করা হয়নি। তবে নাম ও পদবি দেখে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁরা সৌদি আরবের নাগরিক।

রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, রক্তপাত উদ্বুদ্ধ করে এমন সন্ত্রাসী ধারণা লালন, সন্ত্রাসী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ও অর্থায়ন, সমাজের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ব্যাহত করার লক্ষ্যে এগুলোর সঙ্গে যুক্ত থাকা ও সহায়তা করা এবং জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়ার দায়ে ওই সাতজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। তবে অভিযোগগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।

সৌদি আরবের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কাজ করা সংস্থা ইউরোপিয়ান সৌদি অর্গানাইজেশন ফর হিউম্যান রাইটসের ভাইস প্রেসিডেন্ট আদেল আল সাইদ মনে করেন, অভিযোগগুলো ‘অস্পষ্ট’।

আদেল আল সাইদ এএফপিকে বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা কোন ‘সন্ত্রাসী সংগঠনের’ সদস্য, বিবৃতিতে তা উল্লেখ করেনি কর্তৃপক্ষ। তাঁরা আসলে কী অপরাধ করেছেন, এসব অপরাধকর্মে ভুক্তভোগীদের ভূমিকা কী, তা উল্লেখ করা হয়নি।

সৌদি আরবে গত বছরের শুধু ডিসেম্বরেই ৩৮ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। ওই বছর যাঁদের শিরশ্ছেদ করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ৩৩ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ–সংক্রান্ত অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। এ ছাড়া রাষ্ট্রদ্রোহের কারণে দুই সেনার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।