গাজা ছেড়েছে আরও আড়াই লাখ মানুষ

ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ। গতকাল জার্মানির বার্লিনেছবি: রয়টার্স

গাজা নগরী এলাকায় কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্র হামলা চালানোর পর থেকে আড়াই লাখের বেশি মানুষ শহর ছেড়ে গাজার অন্যান্য অংশে চলে গেছে। গতকাল শনিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। সেনাবাহিনীর আরবি ভাষার মুখপাত্র কর্নেল আভিখাই আদ্রিয়ি এক্সে লিখেছেন, সামরিক বাহিনীর (আইডিএফ) হিসাব অনুযায়ী, গাজা নগরীর ২ লাখ ৫০ হাজারের বেশি বাসিন্দা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য শহর ছেড়ে চলে গেছে।

জাতিসংঘের ধারণা অনুযায়ী, গাজা নগরী এবং এর আশপাশে প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনি বসবাস করে।

গতকাল শনিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী পশ্চিমাঞ্চলের বাসিন্দাদের তাড়াতাড়ি শহর ছাড়ার জন্য লিফলেট বিতরণ করেছে। একই সময়ে গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা ব্যাপক বিমান হামলার তথ্য জানিয়েছে।

গাজায় হামলা বন্ধ করে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রয়েছে ইসরায়েল। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, হামাসকে ধ্বংস করার জন্য তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

গত কয়েক সপ্তাহে ইসরায়েলি বাহিনীর গাজার উঁচু ভবনগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে হামলা করছে। তারা বলছে, এসব ভবন হামাস ব্যবহার করছে।

জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আশঙ্কা, গাজায় হামলা সেখানকার মারাত্মক মানবিক পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করবে। জাতিসংঘ ইতিমধ্যে সেখানে দুর্ভিক্ষের ঘোষণা দিয়েছে।

গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সকালেও ইসরায়েলি হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার অন্তত ৫০ জন নিহত হন। ২০২৩ সালে ইসরায়েলের হামলার শুরুর পর থেকে গাজায় ৬৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

গাজা নগরীর বাসিন্দা উম আনাস আল-আশকার বলেন, ‘আমরা প্রতিটি রাতে ঘুমাতে যাই, জানি না, আমরা জীবিত উঠব কি না, এ কথা ভেবে।’

এদিকে দ্য গার্ডিয়ান–এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান হারজি হালেভি বলেছেন, গাজা যুদ্ধে ২ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি হতাহত হয়েছে। একই সঙ্গে তিনি স্বীকার করেছেন, সামরিক অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি বা তাঁর অধীনস্থরা যেকোনো আইনি পরামর্শ উপেক্ষা করেছেন।

মিসরে হামাস নেতাদের হত্যাচেষ্টা

মিসরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বরাতে মিডল ইস্ট আই জানিয়েছে, মিসরের রাজধানী কায়রোতে হামাস নেতাদের নিশানা করে ইসরায়েলি হামলার চক্রান্ত রুখে দেওয়া হয়েছে। কায়রো ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেছে, এ ধরনের যেকোনো হামলার কঠোর জবাব দেওয়া হবে। কাতারের রাজধানী দোহায় গত মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেল চারটার দিকে আবাসিক ভবনে প্রায় ১২টি বিমান হামলা চালায় উগ্রবাদী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ইসরায়েল। হামাস নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়, যা পুরো অঞ্চলে নিন্দার ঝড় তুলেছে।