হামাস–ইসরায়েল যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, আরব লিগসহ কারা কী বলছে

গাজায় ইসরায়েলি হামলার পর ধ্বংসস্তূপের পাশ দিয়ে যাচ্ছেন কয়েক ব্যক্তি। ৮ অক্টোবর
ছবি: এএফপি

ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে গতকাল শনিবার। এতে বহু মানুষ নিহত হয়েছেন। অনেককে জিম্মি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় বড় ধরনের যুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এ হামলার কঠোর জবাব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইসরায়েল বলেছে, হামাস তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। দেখে নেওয়া যাক এ পরিস্থিতিকে কোন দেশ বা আন্তর্জাতিক জোট কীভাবে দেখছে বা কী প্রতিক্রিয়া তারা দেখিয়েছে।

আরও পড়ুন

আরব লিগ

আরব লিগের প্রধান আহমেদ আবুল ঘেইট ‘গাজায় সামরিক অভিযান দ্রুত বন্ধের’ দাবি করেছে। তিনি দুই পক্ষের সশস্ত্র লড়াইয়ের অবসান চেয়েছেন। আহমেদ আবুল বলেন, ‘ইসরায়েলের চলমান সহিংস ও চরমপন্থী নীতির বাস্তবায়ন একটি টাইমবোমার মতো। এটি এ অঞ্চলকে অদূর ভবিষ্যতে স্থিতিশীলতার বড় কোনো সুযোগ থেকে বঞ্চিত করছে।’

ব্রাজিল

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান সভাপতি ব্রাজিল বলেছে, সহিংসতা বন্ধে তারা পরিষদের দ্রুত সভা আহ্বান করবে।

এর পাশাপাশি ব্রাজিলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ব্রাজিল সরকার ইসরায়েলের ওপর গাজা থেকে শুরু করা ধারাবাহিক রকেট হামলা ও সরাসরি হামলার নিন্দা জানায়।’ ‘পরিস্থিতি আরও গুরুতর’ যেন না হয়, সে জন্য দুই পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটির সরকার।

আরও পড়ুন

বেলজিয়াম

বেলজিয়ামের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাজা লাহবিব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (টুইটার) লিখেছেন, ‘ইসরায়েলের সাধারণ নাগরিকের ওপর ব্যাপকহারে রকেট হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানায় বেলজিয়াম। সন্ত্রাস ও সহিংসতা শুধু কষ্টই বাড়িয়ে তোলে। আর এতে আলোচনার পথে বিঘ্ন সৃষ্টি করে।  যারা এ হামলায় আক্রান্ত, আমরা তাদের নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমরা এ ঘটনা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’

ইউরোপীয় কমিশন

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডা লেন এক্সে দেওয়া তাঁর পোস্টে লিখেছেন, ‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামাসের সন্ত্রাসী হামলায় আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে নিন্দা জানাই। এ ধরনের ঘৃণ্য হামলার বিরুদ্ধে নিজেদের রক্ষা করার অধিকার ইসরায়েলের আছে।’

কমিশনের বৈদেশিক নীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, ‘আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে হামাসের এ হামলার নিন্দা জানাই। দ্রুত এই ভয়ানক হামলা বন্ধ হওয়া উচিত। সন্ত্রাসবাদ ও সহিংসতা কোনো সমস্যার সমাধান দিতে পারে না।’

আরও পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা ‘ইসরায়েলের ওপর হামাসের এই সন্ত্রাসী হামলার’ নিন্দা জানায়। হামলার পর হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রেসিডেন্ট (জো বাইডেন) এ ঘটনার দিকে দৃষ্টি রাখবেন। হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা ইসরায়েলি সহযোগীদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে চলেছে।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্র দ্ব্যর্থহীনভাবে ইসরায়েলের সাধারণ নাগরিকদের ওপর হামাসের এই সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানায়। সন্ত্রাসের পক্ষে কোনো যুক্তি কখনোই থাকে না। ইসরায়েলের সরকার ও জনগণের পক্ষে আমরা আছি।’

জার্মানি

জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, ‘ইসরায়েল থেকে ভীতিকর সংবাদ এসেছে। গাজা থেকে রকেট হামলার এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে সন্ত্রাস বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় আমরা শঙ্কিত। জার্মানি হামাসের এই হামলার নিন্দা জানায় এবং ইসরায়েলের পক্ষে আছে।’

জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানালিনা বেয়ারবক বলেন, বার্লিন গাজা থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পরিচালিত এ হামলার নিন্দা জানায়। নিরীহ মানুষের ওপর সন্ত্রাস এবং রকেট হামলা দ্রুত বন্ধ করতে হবে।

ইরান

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী হোসেইনি খামেনির উপদেষ্টা রাহিম সাফাভি এই হামলাকে সমর্থন করেছে। আইএসএনএ বার্তা সংস্থায় দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ সমর্থনের কথা জানান। রাহিম সাফাভি বলেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনের যোদ্ধাদের অভিনন্দন জানাই। ফিলিস্তিন ও জেরুজালেম স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনের যোদ্ধাদের পাশে থাকব আমরা।’ ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, হামাসের এ হামলা ইসরায়েলের দখলদারির বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের আস্থা বাড়াবে।

সৌদি আরব

সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এক বিবৃতিতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে এই সংঘাতের দ্রুত সমাপ্তি চেয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ফিলিস্তিনিদের একটি অংশ এবং ইসরায়েলি দখলদারি বাহিনীর মধ্যে সংঘাতের ঘটনা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। এ ঘটনা একাধিক এলাকায় বড় ধরনের সন্ত্রাসের সৃষ্টি করেছে।’