গাজায় যুদ্ধবিরতি ও যুদ্ধ নিয়ে ভাবনা জানালেন নেতানিয়াহু

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুফাইল ছবি:এএফপি

গাজার সশস্ত্র সংগঠন হামাসের সঙ্গে ‘আংশিক’ যুদ্ধবিরতিতে যেতে প্রস্তুত থাকার আভাস দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। যাতে সবাইকে না হলেও অন্তত কয়েকজন ইসরায়েলি জিম্মিকে গাজা থেকে দেশে ফিরেয়ে আনা যায়।

তবে গাজায় যুদ্ধ অবসানের পথ সুগম করবে—এমন কোনো চুক্তিতে যেতে তিনি এখনো রাজি নন। গতকাল রোববার ইসরায়েলি টেলিভিশন স্টেশন চ্যানেল ফোরটিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘আমাদের লক্ষ্য জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা এবং গাজায় হামাসের রাজত্ব নির্মূল করা।’

আট মাসের বেশি সময় ধরে গাজা যুদ্ধ চলছে। গাজা থেকে জিম্মিদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে হাজার হাজার ইসরায়েলি গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকবার সড়কে নেমে বিক্ষোভ করছেন। বিক্ষোভকারীদের মূল দাবি যেকোনো মূল্যে জিম্মিদের দ্রুত ফেরত আনা এবং দেশটিতে আগাম নির্বাচন।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার পথ সুগম করার রূপরেখা প্রণয়ন করে তিন স্তরে ছয় সপ্তাহের একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাব করেন। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, ইসরায়েল তাদের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ‘রাজি আছে’। কিন্তু নেতানিয়াহু বা ইসরায়েলের কোনো কর্মকর্তা আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন প্রস্তাবে রাজি থাকার বিষয়ে কিছু বলেননি। বরং তাঁরা বারবার বলেছেন, হামাসকে গাজা থেকে নির্মূল না করা পর্যন্ত ইসরায়েল অভিযান অব্যাহত রাখবে।

আরও পড়ুন

সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, ‘গাজার সর্বদক্ষিণের নগরী রাফায় তাদের সেনা অভিযান শেষের দিকে। হামাসের বিরুদ্ধে তীব্র লড়াইও শেষের দিকে। তবে এর অর্থ এই নয় যে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পথে।’ হামাসকে নির্মূল করার পর গাজা পরিচালনার জন্য একটি বেসামরিক প্রশাসন গঠন করতে চায় ইসরায়েল।

নেতানিয়াহু বলেন, ‘যদি সম্ভব হয়, তবে স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের নিয়ে ওই প্রশাসন গঠন করা হবে। সেই সঙ্গে গাজায় মানবিক ত্রাণ সরবরাহ করতে ওই অঞ্চলের অন্যান্য দেশের সহায়তা নেওয়া হতে পারে।’

গাজা থেকে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের তেল আবিবে সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ
ফাইল ছবি: রয়টার্স
আরও পড়ুন

গাজায় যুদ্ধের তীব্রতা কমানোর কথা বললেও ইসরায়েল এখন নতুন করে আরেকটি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই উত্তরের লেবানন সীমান্তে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের  পাল্টাপাল্টি হামলা চলেছে। উভয় পক্ষের কথার লড়াইয়ে ওই সীমান্ত সংঘাত এখন সর্বাত্মক যুদ্ধে পরিণত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে।

এ বিষয়ে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আত্মরক্ষার খাতিরে’ শিগগিরই তিনি উত্তর সীমান্তে বেশি সেনা মোতায়েন করবেন। আত্মরক্ষা ও উদ্বাস্তুদের ফেরাতে এমনটি করা হবে বলেন তিনি।

ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ সংঘাতের কারণে ইসরায়েলের উত্তর ও লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ বাঁচাতে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে।