হামাসের হামলায় কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ, জাতিসংঘ সংস্থার প্রধানের পদত্যাগ চায় ইসরায়েল

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের বোমার আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছে একটি বাড়ি। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে অসহায় দুই ফিলিস্তিনি শিশু। গতকাল দক্ষিণ গাজার রাফায়ছবি: এএফপি

গাজায় জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রধানের পদত্যাগ দাবি করেছে ইসরায়েল। সেই সঙ্গে গাজায় জাতিসংঘের এই সংস্থার মানবিক ত্রাণ কার্যক্রম বন্ধ করার জোরালো দাবি জানিয়েছে দেশটি।

ইসরায়েলের অভিযোগ, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলার সঙ্গে সংস্থাটির কয়েকজন কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন। ইসরায়েল অভিযোগ তোলার পরপরই জাতিসংঘের সংস্থাটিকে নতুন করে তহবিল দেওয়া সাময়িকভাবে বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জার্মানি, ব্রিটেন, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া ও ফিনল্যান্ড তহবিল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।

আরও পড়ুন

লাজারিনি এক্সে এক পোস্টে বলেছেন, ‘গাজাবাসীদের এই অতিরিক্ত শাস্তি প্রাপ্য ছিল না। এটা আমাদের সবাইকে আহত করেছে।’

ইউএনআরডব্লিউএ গত শুক্রবার জানিয়েছে, ইসরায়েলের অভিযোগের পর কয়েকজন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে তারা। আর কোনো কর্মকর্তা ইসরায়েলে হামলার সঙ্গে জড়িত থাকলে তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজারিনি। তবে কতজন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে, তাঁদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে কি না, তা জানাননি লাজারিনি।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কেৎজ ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান কমিশনার জেনারেল ফিলিপ লাজারিনির পদত্যাগ চেয়েছেন।

গতকাল শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে কেৎজ লিখেছেন, ‘লাজারিনি অনুগ্রহ করে পদত্যাগ করুন।’

আরও পড়ুন

ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান এর আগে এক্সে এক পোস্টে বলেন, তহবিল কমানোর অর্থ হলো, গাজায় জাতিসংঘের কার্যক্রম ভেঙে পড়তে চলেছে। এর পাল্টা জবাবে কেৎজ এই পোস্ট দেন।

কেৎজ এর আগে এক বিবৃতিতে বলেন, গাজা পুনর্গঠনে প্রকৃত শান্তি ও উন্নয়নের জন্য যেসব সংস্থা কাজ করছে, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে।

এদিকে গতকাল ইসরায়েলের এমন অভিযোগের নিন্দা জানিয়েছে হামাস। জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে হুমকি ও ভয় না দেখানোর অনুরোধ জানিয়েছে হামাস।

ইসরায়েল ও ইউএনআরডব্লিউএর মধ্যে কয়েক বছর ধরে সম্পর্কে টানাপোড়েন ছিল। তবে সম্প্রতি এই সম্পর্কের আরও অবনতি হয়েছে। ইউএনআরডব্লিউএ ট্যাংকে ইসরায়েলের হামলা নিন্দা জানিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, সেখানে গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস শহরের গৃহহীন মানুষের আশ্রয়স্থল ছিল। গত বুধবারের ওই হামলায় ১৩ জন নিহত হন। ওই আশ্রয়কেন্দ্রে কয়েক হাজার মানুষ থাকতেন।

লাজারিনি বুধবারের ওই হামলাকে যুদ্ধের নীতি লঙ্ঘন হিসেবে সমালোচনা করেছেন।
ইসরায়েলের তথ্য অনুসারে, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে ১ হাজার ১৪০ জন নিহত হয়েছেন। বেশির ভাগই নাগরিক। হামাসের কাছে ইসরায়েলের ২৫০ জন জিম্মি রয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসরায়েলের হামলায় কমপক্ষে ২৬ হাজার ২৫৭ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৭০ শতাংশ নারী ও শিশু।