হামলার জবাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে যাচ্ছে কাতার

হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে দোহায় আবাসিক ভবনে হামলা চালায় ইসরায়েল। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি ভবন দেখা যাচ্ছে। কাতারের দোহায়, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ছবি: রয়টার্স

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল-খুলাইফি গত বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রেসিডেন্ট তমুকো আকানের সঙ্গে দেখা করেছেন। নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে তাঁরা দেখা করেন। কারণ, কাতার নিজেদের রাজধানীতে ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করছে।

বৈঠকের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে আল-খুলাইফি লেখেন, দ্য হেগে তাঁর সফর ‘আইনি পথ খতিয়ে দেখার জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত দলের কাজের অংশ। কাতারের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অবৈধ সশস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়া জানাতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

গত বছর আইসিসিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের মামলা হয়। গাজায় সাধারণ মানুষকে সরাসরি লক্ষ্যবস্তু করা এবং দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির মতো কৌশল গ্রহণের অভিযোগে এ মামলা হয়। গত বছরের নভেম্বরে এই দুজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আইসিসি।

যেকোনো ধরনের বিদেশি হামলার বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে উপসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিলভুক্ত (জিসিসি) দেশগুলো। বৃহস্পতিবার ছয় সদস্যের জোটটির যৌথ প্রতিরক্ষা কাউন্সিল কাতারের রাজধানী দোহায় এক বিশেষ অধিবেশনে এ বিষয়ে সম্মত হয়।

৯ সেপ্টেম্বর দোহায় ইসরায়েলের হামলার প্রেক্ষাপটে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দোহায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের নেতাদের লক্ষ্য করে ওই হামলা চালানো হয়েছিল। তখন হামাসের শীর্ষ নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছিলেন।

হামাস জানায়, হামলায় তাঁদের শীর্ষ কোনো নেতা নিহত হননি। তবে তাঁদের পাঁচজন সদস্য ও কাতারের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হন।

আরও পড়ুন

গাজা সিটিতে কয়েক দিন ধরে সর্বাত্মক হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। এরই অংশ হিসেবে এ শহরে বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযান চালাচ্ছে দেশটি। হামলার মুখে গাজা সিটি থেকে ফিলিস্তিনিরা দলে দলে হেঁটে আরও দক্ষিণ দিকে সরে যাচ্ছেন। অনেকে যানবাহন ও গাধায় টানা গাড়িতে গাজা সিটি ছাড়ছেন।

ইসরায়েলের দাবি, গত কয়েক সপ্তাহে প্রায় সাড়ে তিন লাখ ফিলিস্তিনি গাজা সিটি ছেড়েছেন। স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, শহরটিতে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা শুরুর আগে কমবেশি ১০ লাখ ফিলিস্তিনি ছিলেন, যাঁদের অনেকে অন্যান্য জায়গা থেকে একাধিকবার স্থানচ্যুত হয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন

গাজায় ইসরায়েলের হামলায় গতকাল অন্তত আরও ২৯ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গাজা সিটিতে নিহত হয়েছেন ১৯ জন। প্রায় অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে গতকাল অপুষ্টিতে মারা গেছেন আরও চারজন। এতে সেখানে অপুষ্টি ও অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৩৫, যাঁদের মধ্যে শিশু ১৪৭টি। এ নিয়ে প্রায় দুই বছরের ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়াল অন্তত ৬৫ হাজার ১৪১। আহত হয়েছেন অন্তত ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯২৫ জন।

আরও পড়ুন