সিরিয়ায় রুশ বাহিনীর দায়িত্বে থাকা জেনারেল ‘বরখাস্ত’

সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহৎ নগরী আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিদ্রোহীরাছবি: রয়টার্স

সিরিয়ায় রুশ বাহিনীর অভিযানের দায়িত্বে থাকা জেনারেলকে বরখাস্ত করেছে মস্কো। যুদ্ধসংক্রান্ত রুশ ব্লগাররা গতকাল রোববার এ খবর দিয়েছেন।

সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহৎ নগরী আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিদ্রোহীরা। এ ঘটনাকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের জন্য বিগত বছরের মধ্যে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনার পর সিরিয়ায় রুশ বাহিনীর অভিযানের দায়িত্বে থাকা জেনারেলকে বরখাস্তের খবর সামনে এল।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের প্রধান মিত্র রাশিয়া। সিরিয়ায় রুশ বাহিনীর দায়িত্বে থাকা যে জেনারেলকে বরখাস্তের খবর পাওয়া গেছে, তাঁর নাম সের্গেই কিসেল।

৫৩ বছর বয়সী কিসেলকে তাঁর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার খবরটি এসেছে রায়বার টেলিগ্রাম চ্যানেলে। চ্যানেলটি রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘনিষ্ঠ। এ ছাড়া ভয়েনি ওসভেডোমিটেল (সামরিক তথ্যদাতা) নামের ব্লগেও এ খবর দেওয়া হয়েছে।

খবরের বিষয়ে মন্তব্যের জন্য রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়া বেশ কয়েকবার তার সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন পদে রদবদল আনে। তবে এসব রদবদলের বিষয় প্রকাশ্যে ঘোষণা দেয়নি রাশিয়া।

অসমর্থিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিসেলের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন রুশ কর্নেল জেনারেল আলেকজান্ডার চাইকো।

রুশ সামরিক ব্লগগুলো কিসেলের কর্মক্ষমতা নিয়ে সমালোচনায় মুখর ছিল। তিনি আগে ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলে রাশিয়ার প্রথম গার্ডস ট্যাংক আর্মির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ২০২২ সালের শেষ দিকে ইউক্রেনীয় সেনারা পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে সেখান থেকে রুশ বাহিনীকে হটিয়ে দেন।

রায়বার টেলিগ্রাম চ্যানেলে এই ধারণা প্রকাশ করা হয়েছে যে সিরিয়ায় রুশ বাহিনীর দায়িত্ব আবার সের্গেই সুরোভিকিনকে দেওয়া হতে পারে। সিরিয়ায় নৃশংসতার জন্য তিনি ‘জেনারেল আর্মাগেডন’ ডাকনাম অর্জন করেছিলেন। তিনি অল্প সময়ের জন্য রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধের দায়িত্বে ছিলেন।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়ায় ২০১১ সাল থেকে গৃহযুদ্ধ চলছে। আনুষ্ঠানিকভাবে এই গৃহযুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। তবে কয়েক বছর আগে দেশটির বেশির ভাগ অংশে সংঘর্ষ থেমে গিয়েছিল। মিত্র রাশিয়া ও ইরানের সহায়তায় আসাদ বাহিনী সিরিয়ার বেশির ভাগ অংশ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল। ২০১৬ সাল থেকে আলেপ্পো সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর দখলে ছিল। আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহীরা নেওয়ার পর বাশার আল-আসাদের পক্ষে তাঁর মিত্র রাশিয়া বিদ্রোহীদের ওপর বিমান হামলা চালিয়েছে। আকস্মিকভাবে বিদ্রোহীদের হাতে আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ হারানোর বিষয়টি সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে নতুন মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে।