যেভাবে মাংসখেকো পাখি দিয়ে লাশ খুঁজছে ইসরায়েল

মরদেহ খুঁজতে শকুন ব্যবহার করছে ইসরায়েলি বাহিনী
প্রতীকী ছবি: এএফপি

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলায় গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে বহু মানুষের মৃত্যু হয়। তাঁদের অনেকের মরদেহ খুঁজে বের করতে বিশেষ এক পদ্ধতি হাতে নিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির একজন বন্য প্রাণিবিশেষজ্ঞ বলেছেন, মরদেহগুলো খুঁজতে মাংসখেকো পাখি ব্যবহার করা হচ্ছে।

ওই বিশেষজ্ঞের নাম ওহাদ হাৎজোফে। তিনি ইসরায়েলের প্রকৃতি ও উদ্যান কর্তৃপক্ষের একজন কর্মকর্তা। ওহাদ জানান, মরদেহ খুঁজতে শরীরে ট্র্যাকিং ডিভাইস (শনাক্তকরণ যন্ত্র) লাগানো ইগল, শকুনসহ অন্যান্য শিকারি পাখি কাজে লাগানো হচ্ছে। ওই যন্ত্র থেকে পাওয়া তথ্য মরদেহের অবস্থান শনাক্তে সহায়তা করছে।

আরও পড়ুন

৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ৪০০–এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া অনেককে জিম্মি করে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নিয়ে যান হামাস যোদ্ধারা। সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচার বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। চলছে স্থল অভিযানও। এতে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ৮০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

পাখির মাধ্যমে মরদেহের অবস্থান শনাক্তের বুদ্ধি এঁটেছিল ইসরায়েলি বাহিনীর মানবসম্পদ শাখার ‘ইআইটিএএন’ নামের একটি দল। নিখোঁজ সেনাসদস্যদের খুঁজে বের করার দায়িত্ব তাদের ওপর। ওহাদ বলেন, ‘যুদ্ধ শুরুর সময় কয়েকজন সংরক্ষিত সেনা আমার কাছে এসেছিলেন। তাঁরা জানতে চেয়েছিলেন, আমার পাখিগুলো কোনোভাবে সহায়তা করতে পারে কি না?’

আরও পড়ুন

বিপন্ন গ্রিফন শকুন শনাক্তের একটি প্রকল্পের প্রধান ওহাদ। এই শকুনগুলো মূলত মৃত পশুপাখির মাংস খেয়ে বেঁচে থাকে। এ ছাড়া ওই প্রকল্পের আওতায় ইগলের মতো অন্যান্য শিকারি পাখি নিয়েও কাজ করা হয়। সেগুলোও বেঁচে থাকতে মরদেহ খেয়ে থাকে।

গত ২৩ অক্টোবর এমনই একটি ইগল গাজা উপত্যকার কাছে ইসরায়েলের বেরি এলাকায় পাওয়া যায়। উত্তর রাশিয়ায় গ্রীষ্মকাল কাটিয়ে এক দিন আগে সেটি ইসরায়েলের আকাশসীমায় প্রবেশ করেছিল। ওহাদ বলেন, তিনি ওই ইগলের শরীরে লাগানো ট্র্যাকিং ডিভাইস থেকে পাওয়া তথ্য সেনাবাহিনীর কাছে পাঠান। পরে ওই এলাকায় গিয়ে চারটি মরদেহ পাওয়া যায়। অপর একটি ইগল ইসরায়েলের অভ্যন্তরে আরও কয়েকটি মরদেহ খুঁজতে সহায়তা করেছে।

আরও পড়ুন

বেরি ইসরায়েলের কিবুৎজ এলাকায় অবস্থিত। হামাসের সাম্প্রতিক হামলায় সেখানে ৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বেরি এলাকায় এখনো ৩০ জনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে, হামাসের হাতে জিম্মি প্রায় ২৪০ জনের মধ্যে তাঁরাও রয়েছেন। গত সোমবার ইসরায়েল পুলিশ জানিয়েছে, হামাসের হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৮৪৩ জন বেসামরিক মানুষ এবং ৩৫১ জন সেনাসদস্য রয়েছেন। অনেকের এখনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন