ইসরায়েলের ফুটবল নিষিদ্ধ করতে উয়েফাকে চিঠি, বার্সেলোনায় বিক্ষোভ

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার একটি নৌযানে আরোহীরা হাত উঁচিয়ে আছেন। তাঁদের দিকে বন্দুক তাক করেছেন এক ইসরায়েলি সেনা। গতকাল ভূমধ্যসাগরে গাজা অভিমুখে যাত্রাপথেছবি: রয়টার্স

গাজা অভিমুখী ত্রাণবাহী নৌবহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলার প্রতিবাদে স্পেনের বার্সেলোনা শহরের রাস্তায় বিক্ষোভ হয়েছে।

আয়োজকেরা বলছেন, ফ্লোটিলার নৌবহরে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান এবং শত শত অধিকারকর্মীকে আটক করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছেন তাঁরা।

এদিকে ইসরায়েল ও তাদের ক্লাবগুলোকে সব প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করতে ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থা উয়েফাকে আহ্বান জানিয়েছেন ৩০ জনের বেশি আইনবিশেষজ্ঞ। গাজায় ইসরায়েলের চালানো নৃশংসতার প্রতিবাদে এমন পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার উয়েফার সভাপতি আলেক্সান্দার সেফেরিন বরাবর একটি চিঠি লিখেছেন ওই আইনবিশেষজ্ঞরা। জাতিসংঘের তদন্তকারীদের তৈরি করা সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ টেনে  চিঠিতে বলা হয়, ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করা এখন ‘অপরিহার্য।’ জাতিসংঘের তদন্তকারীদের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েল যে জাতিগত নিধন চালাচ্ছে, তা ইতিমধ্যেই নিশ্চিত।

আরও পড়ুন

চিঠিতে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও এর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, তাদের আইনি ও নৈতিক দায়িত্ব পালন করে আন্তর্জাতিক আইন রক্ষা করতে হবে এবং অবিলম্বে ইসরায়েলি ফুটবলের ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে।

বিশ্বের ফুটবল থেকে ইসরায়েলকে বিচ্ছিন্ন করার দাবি কয়েক মাস ধরে জোরালো হয়েছে। গ্লাসগো, প্যারিস, রোম ও বিলবাওসহ বিভিন্ন শহরের ফুটবল–ভক্তরা ফিলিস্তিনি পতাকা উড়িয়ে গাজার প্রতি সংহতি জানাচ্ছেন।

চিঠিতে গাজার ক্রীড়াঙ্গনের ওপর ইসরায়েলের ভয়াবহ প্রভাবের কথাও তুলে ধরা হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে অন্তত ৪২১ জন ফিলিস্তিনি ফুটবলার নিহত হয়েছেন।

চিঠিতে আরও বলা হয়, ইসরায়েলের অব্যাহত বোমা হামলা গাজার ফুটবল অবকাঠামোকে পদ্ধতিগতভাবে ধ্বংস করছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড একটি গোটা প্রজন্মের ক্রীড়াবিদদের নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। ফিলিস্তিনি খেলাধুলার মূল ভিত্তিকে নষ্ট করছে।

এ আইনবিশেষজ্ঞদের অভিযোগ, ইসরায়েলি ফুটবল সংস্থা (আইএফএ) এই লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোকে চ্যালেঞ্জ করতে ব্যর্থ হয়েছে। সে কারণে এটিকেও গাজায় ইসরায়েলি নৃশংসতার সঙ্গে জড়িত বলে ধরা হচ্ছে। আর তা উয়েফা প্রতিযোগিতায় এ সংস্থার অংশগ্রহণকে অগ্রহণযোগ্য করে তুলেছে।

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় ইসরায়েলের হামলার সময় বুধবার আটক করা হয় গ্রেটা থুনবার্গ (মাঝে), থিয়াগো আভিলাসহ (ডানে) অধিকারকর্মীদের
ছবি: এএফপি

চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন লেমকিন ইনস্টিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশনের নির্বাহী পরিচালক এলিসা ভন জোডেন-ফোরজি, পাশাপাশি কয়েকজন সাবেক জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ এবং আন্তর্জাতিক আইনবিষয়ক গবেষক।

বৃহস্পতিবার উয়েফা সভাপতি আলেক্সান্দার সেফেরিন বরাবর একটি চিঠি লিখেছেন আইনবিশেষজ্ঞরা। জাতিসংঘের তদন্তকারীদের তৈরি করা সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ টেনে  চিঠিতে বলা হয়, ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করা এখন ‘অপরিহার্য।’

ইসরায়েলের জাতীয় দল এখন ইউরোপীয় বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে খেলছে এবং দেশটির ফুটবল ক্লাবগুলো উয়েফার দেশীয় টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে।

বিশ্বের ফুটবল থেকে ইসরায়েলকে বিচ্ছিন্ন করার দাবি কয়েক মাস ধরে জোরালো হয়েছে। গ্লাসগো, প্যারিস, রোম ও বিলবাওসহ বিভিন্ন শহরের ফুটবল–ভক্তরা ফিলিস্তিনি পতাকা উড়িয়ে গাজার প্রতি সংহতি জানাচ্ছেন।