গণকবর থেকে শতাধিক লাশ তুলে নিয়ে গেছে ইসরায়েলি সেনারা

আল-শিফা হাসপাতালের সব কক্ষে তল্লাশি ও সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন সশস্ত্র ইসরায়েলি সেনারাছবি: রয়টার্স

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল–শিফার গণকবর থেকে শতাধিক লাশ তুলেছে ইসরায়েলি সেনারা। গাজার এক সরকারি কর্মকর্তা শনিবার এ তথ্য জানান।

গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয়ের কর্মকর্তা ইসমাইল আল–থাওয়াবতা শনিবার বলেন, ‘দখলদার ইসরায়েলি সেনারা (আল–শিফা) হাসপাতাল প্রাঙ্গণে থাকা গণকবর থেকে গতকাল (শুক্রবার) শতাধিক লাশ তোলে। দাফনের জায়গা না থাকায় এভাবে গণকবর দেওয়া হয়েছিল।’

ইসমাইল আল-থাওয়াবতা আরও জানান, গত কয়েক দিনে হাসপাতালে আরও অনেকের মৃত্যু হয়েছে। এসব লাশ হাসপাতালের ভেতরে কবর দিতে চেয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে হাসপাতাল দখল করে থাকা ইসরায়েলি সেনারা হাসপাতাল প্রাঙ্গণে লাশ দাফন করতে বাধা দেয়।

এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালে লাশের স্তূপ জমে গিয়েছিল। এসব লাশ দাফন করার জায়গা পাওয়া যাচ্ছিল না। এমন এক পরিস্থিতিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল প্রাঙ্গণেই দেড় শতাধিক লাশ গণকবর দেয়।

গত মঙ্গলবার আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়াহ বলেন, ইসরায়েলি হামলার ভয়াবহতায় মারা যাওয়া ১৭৯ জনকে হাসপাতালটির চত্বরে গণকবর দিতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। হাসপাতালে জ্বালানি শেষ হওয়ার পর চিকিৎসাসেবা না পেয়ে মারা যাওয়া ৭ শিশুসহ ৩৬ জনকেও গণকবর দেওয়া হয়েছে।

ইসমাইল আল-থাওয়াবতা বলেন, ইসরায়েলের সেনারা হাসপাতাল প্রাঙ্গণে থাকা ওই গণকবর খুঁড়ে ফেলেন। এরপর সেখান থেকে শতাধিক লাশ বের করে নিয়ে যান।

আরও পড়ুন

গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে আল–শিফা হাসপাতালে অভিযান শুরু করেন ইসরায়েলি সেনারা। ছয়টি ট্যাংকসহ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা হাসপাতালটিতে ঢোকেন। হাসপাতালে হামাসের আস্তানা আছে দাবি করে এ অভিযান চালানো হলেও হামাস তা অস্বীকার করে আসছে।

হাসপাতালে ঢুকে শত শত রোগী ও সেখানে আশ্রয় নেওয়া কয়েক হাজার উদ্বাস্তুকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন ইসরায়েলি সেনারা। হাসপাতালের প্রতিটি কক্ষে গিয়ে তল্লাশি চালাতে দেখা যায় তাঁদের।

আরও পড়ুন

অভিযান শুরুর আগে থেকে হাসপাতালটি খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে আসছিল ইসরায়েল। হাসপাতালের চারদিকে মোতায়েন করে রেখেছিল ট্যাংক–সাঁজোয়া যান। হাসপাতালের আশপাশে বোমা হামলা গোলাগুলি হচ্ছিল। এ অভিযান না চালাতে আহ্বান জানাচ্ছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।

তবে সব আহ্বান উপেক্ষা করে হাসপাতালে অভিযান শুরু করেন ইসরায়েলি সেনারা। এই অভিযান এখনো চলছে। এতে হাসপাতালে থাকা রোগী ও উদ্বাস্তুদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। জাতিসংঘ বলছে, হাসপাতালে রোগী ও উদ্বাস্তু মিলিয়ে ৭ হাজার মানুষ অবস্থান করছেন।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন