রাফায় ইসরায়েলের পুরোদমে হামলা বিপর্যয়ের শামিল হবে: জাতিসংঘপ্রধান

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসফাইল ছবি: রয়টার্স

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার রাফা শহরে ইসরায়েলের অভিযানের প্রতিক্রিয়া ‘পুরো অঞ্চলে’ ছড়িয়ে পড়বে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস।

রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের পরিণাম নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন মন্তব্য করেছেন।

আন্তোনিও গুতেরেস হুঁশিয়ার করে বলেন, রাফায় ইসরায়েলের অভিযানের ‘প্রতিক্রিয়া’ ও সেখানে ‘পুরোদমে হামলা’ ‘বিপর্যয়ের’ শামিল হবে।

মহাসচিব বলেন, ‘আরও অসংখ্য বেসামরিক লোকজনের হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটবে। আরও অসংখ্য পরিবার আবার পালাতে বাধ্য হবে; যদিও যাওয়ার কোনো নিরাপদ জায়গা নেই।’

গাজার বিভিন্ন স্থানে নির্বিচার হামলার মুখে বাস্তুচ্যুত লাখ লাখ ফিলিস্তিনি সর্বশেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে এখানে ঠাঁই নিয়েছেন। এখন অতি ঘনবসতিপূর্ণ এ এলাকাতেও অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। প্রাণ বাঁচাতে এখান থেকেও পালাতে শুরু করেছেন ফিলিস্তিনিরা।

‘অভিযানের প্রতিক্রিয়া আরও বহুদূর—পশ্চিম তীর ও গোটা অঞ্চলে অনুভূত হবে’, বলেন আন্তোনিও গুতেরেস।

রাফায় ইসরায়েলের অভিযানের ফলে গাজা উপত্যকায় তৈরি হওয়া পরিস্থিতি ‘ভুল পথে’ এগোচ্ছে বলেও সতর্ক করে দেন জাতিসংঘপ্রধান।

রাফায় অভিযান না চালাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি সব ধরনের অনুরোধ করা সত্ত্বেও সেখানে হামলা শুরু হয়েছে।
জোসেপ বোরেল, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান  

ইসরায়েলের হামলার কারণে গাজার উত্তর ও মধ্যাঞ্চল থেকে পালিয়ে ১০ লাখের মতো ফিলিস্তিনি রাফায় আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে তাঁবু টানিয়ে গাদাগাদি করে অবস্থান করছেন তাঁরা। শহরটির পূর্বাঞ্চল থেকে এক লাখ ফিলিস্তিনিকে খান ইউনিসে তাঁবুতে আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার এক দিন পরই রাফায় অভিযান শুরু করল ইসরায়েল। প্রাণ বাঁচাতে এখান থেকেও পালানো শুরু করেছেন ফিলিস্তিনিরা।

ইসরায়েলি সেনাদের ট্যাংকবহর রাফা ক্রসিংয়ে প্রবেশ করছে। গতকাল দক্ষিণ গাজায় মিসর সীমান্তের কাছে
ছবি: এএফপি

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, রাফায় অভিযান না চালাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি সব ধরনের অনুরোধ করা সত্ত্বেও সেখানে হামলা শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন

‘আমি আশঙ্কা করছি, এ হামলায় আবারও বিপুলসংখ্যক মানুষ হতাহত হতে চলেছেন। গাজায় এখন আর কোনো নিরাপদ জায়গা নেই,’ বলেন বোরেল।

রাফা এখন গাজার শেষ জায়গা, এখনো যেখানটা ইসরায়েল পুরোপুরি ধুলায় মিশিয়ে দেয়নি।
ছবি : রয়টার্স

এএফপি জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার মিসর সীমান্তবর্তী রাফা ক্রসিংয়ের ফিলিস্তিনি অংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর আগে কেরেম শালম ক্রসিং বন্ধ করে দেয় দেশটি। এতে অবরুদ্ধ গাজা কার্যত এখন বাকি বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর দেওয়া যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব গত সোমবার সন্ধ্যার পর মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেয় ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরই রাফার পূর্বাঞ্চলে ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। আর স্থল অভিযানের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গতকাল রাফা ক্রসিংয়ের ফিলিস্তিনি অংশে অবস্থান নেয় ইসরায়েলি ট্যাংক।

আরও পড়ুন