গাজায় ইসরায়েলের হামলা নিয়ে আবার মুখ খুললেন কমলা হ্যারিস
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার একটি বিদ্যালয়ে গতকাল শনিবার ইসরায়েলের বিমান হামলায় বেসামরিক লোকজন নিহত হওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস।
বিদ্যালয়টিতে ইসরায়েল দুই হাজার পাউন্ডের (একেকটি) তিনটি বোমা ফেলে। এতে ওই ভবনে ৭০ জনের বেশি নিহত হন বলে একটি হাসপাতালের পরিচালক বিবিসিকে জানান। বিদ্যালয়টিতে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা আশ্রয় নিয়েছিলেন।
এই হামলা প্রসঙ্গে কমলা হ্যারিস বলেন, ‘গাজায় আরেকবার অনেক বেসামরিক লোকের প্রাণহানি ঘটল।’ একই সঙ্গে গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা ও জিম্মি মুক্তি বিষয়ে চুক্তি সইয়ের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
হামাসকে মোকাবিলা করার অধিকার ইসরায়েলের রয়েছে, কিন্তু বেসামরিক লোকজনের প্রাণহানি এড়ানোর গুরুত্বপূর্ণ দায়দায়িত্বও আছে তার।কমলা হ্যারিস, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র দাবি করেন, হামলার শিকার আল–তাবাইন বিদ্যালয় হামাস ও ইসলামিক জিহাদের স্থাপনা হিসেবে ব্যবহার হচ্ছিল। তবে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস এ দাবি নাকচ করে দিয়েছে।
অ্যারিজোনার ফিনিক্সে একটি নির্বাচনী প্রচারে কমলা হ্যারিস বলেন, হামাসকে মোকাবিলা করার অধিকার ইসরায়েলের রয়েছে, কিন্তু বেসামরিক লোকজনের প্রাণহানি এড়ানোর গুরুত্বপূর্ণ দায়দায়িত্বও আছে তার।
বিদ্যালয়ে ওই হামলার সমালোচনা করেছে বিভিন্ন পশ্চিমা দেশ ও আঞ্চলিক শক্তি। মিসর বলেছে, এর মধ্য দিয়ে ইসরায়েল এটিই দেখাল, গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা বা যুদ্ধ অবসানে তাদের কোনো আগ্রহ নেই।
আল–আহলি হাসপাতালের প্রধান ফদল নাইম জানান, হামলার পর অনেককে তাঁদের এ হাসপাতালে আনা হয়। ৭০ জনের মতো নিহত হয়েছেন। আরও অনেকে এমনভাবে আহত হয়েছেন যে তাঁদের শনাক্ত করাই কঠিন।
আল-আহলি হাসপাতালের প্রধান ফদল নাইম জানান, হামলার পর অনেককে তাঁদের এ হাসপাতালে আনা হয়। ৭০ জনের মতো নিহত হয়েছেন। আরও অনেকে এমনভাবে আহত হয়েছেন যে তাঁদের শনাক্ত করাই কঠিন।
হামাস এ হামলাকে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ‘ভয়ানক অপরাধ ও বিপজ্জনক উত্তেজনা সৃষ্টি’ বলে মন্তব্য করেছে।
বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের এমন আরও কয়েকটি আশ্রয়স্থলে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, গত ৬ জুলাই পর্যন্ত গাজার ৫৬৪টি বিদ্যালয় ভবনের মধ্যে ৪৭৭টিতে সরাসরি হামলা চালানো হয়েছে বা সেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই সময়ের পর থেকে এক ডজনের বেশি বিদ্যালয়ে চালানো হয়েছে হামলা।
আল–তাবাইন বিদ্যালয়ে এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সম্প্রতি বেইত হানুন শহর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে আসা বেশ কিছু মানুষ। ইসরায়েলি বাহিনী তাঁদের বাড়িঘর ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল।
এর আগে গত জুলাইয়ের শেষ দিকে কমলা হ্যারিস বলেছিলেন, চলমান যুদ্ধের কারণে গাজার মানুষকে যে ধরনের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, তা নিয়ে তিনি নীরব থাকবেন না। ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।