যেকোনো পরিস্থিতিতে ইরানের পাশে থাকার ঘোষণা চীনের

বিশ্বের জটিল পরিস্থিতিতে ইরান ও চীনের একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার। একের পর এক চুক্তি স্বাক্ষর।

চীন সফররত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি (বাঁয়ে) ও প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং (ডানে)। গতকাল বেইজিংয়ে রাষ্ট্রীয় অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে
ছবি: রয়টার্স

পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক যখন তলানিতে, তখন দেশটির প্রতি আবারও একাত্মতা প্রকাশ করল চীন। গতকাল মঙ্গলবার ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের বৈঠক থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

তিন দিনের সফরে চীনে গেছেন ইব্রাহিম রাইসি। সেখানে গতকাল সির সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সিসিটিভির খবরে বলা হয়েছে, সি বলেছেন, বিশ্ব, সময় ও ইতিহাস বদলে যাওয়ার এই জটিল পরিস্থিতিতে ইরান ও চীন একে অপরকে সাহায্য করছে, একাত্মতা এবং সহযোগিতায় একসঙ্গে কাজ করেছে। এ ছাড়া বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক পরিস্থিতি যতই বদলে যাক না কেন, ইরানের পাশে চীন থাকবে বলে জানিয়েছেন সি চিন পিং।

বিগত ২০ বছরে ইরানের কোনো প্রেসিডেন্ট চীন সফর করেননি। এ ছাড়া এমন সময়ে প্রেসিডেন্ট রাইসি চীন সফর করছেন, যখন যুক্তরাষ্ট্র–চীন নতুন করে বাক্‌যুদ্ধ শুরু হয়েছে। ফলে এই সফরকে আলাদাভাবেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

গতকাল রাইসি চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে পৌঁছালে তাঁকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এ সময় সি চিন পিং উপস্থিত ছিলেন।

চীন ও ইরানের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আগে থেকেই বেশ শক্তিশালী। এ জন্য ২০২১ সালে দুই দেশ ২৫ বছরের জন্য ‘স্ট্র্যাটেজিক কোপারেশ চুক্তি’ও স্বাক্ষর করেছে। রাইসির এবারের সফরে আর্থিক ও বাণিজ্যিক খাতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন। এরই মধ্যে কৃষি, বাণিজ্য, পর্যটন, পরিবেশ সুরক্ষা, স্বাস্থ্য, দুর্যোগ–ত্রাণ, সংস্কৃতি ও খেলাধুলার বিষয়ে বেশ কিছু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে জানিয়েছে সিসিটিভি।

পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ইরান, রাশিয়া ও চীনের সম্পর্ক গত এক বছরে বেশ খানিকটা বদলে গেছে ইউক্রেন হামলাকে কেন্দ্র করে। রাশিয়া এই যুদ্ধে ইরানের অস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে পশ্চিমারা নতুন করে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে। আবার সম্প্রতি মার্কিন আকাশে বেলুন ওড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চীনকে দোষী করছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে গতকাল সি বলেন, একতরফাবাদ এবং আধিপত্যবাদ প্রতিরোধ করতে এবং সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও জাতীয় মর্যাদা রক্ষায় ইরানকে সমর্থন করে চীন।

সি চিন পিং বলেন, ইরানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা এবং ইরানের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার ক্ষেত্রে বহিঃশক্তি যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে, তার বিরোধিতা করে বেইজিং।

পারমাণবিক কর্মসূচিকে ঘিরে ইরান এখনো জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। এ নিয়েও গতকাল কথা বলেছেন সি চিন পিং। তিনি বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে বাস্তসম্মত ও সঠিক সমাধানে পৌঁছাতে কাজ করে যাবে চীন।