রমজানকে সামনে রেখে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল বৈঠক, উত্তেজনা কমাতে সম্মতি

শারম আল শেখে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বৈঠকের প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলার সময় গাজা সীমান্তে টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়
ছবি: রয়টার্স

পবিত্র রমজানকে সামনে রেখে দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা কমানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল। গতকাল রোববার মিসরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে।

আসন্ন রমজানে জেরুজালেমের পবিত্র স্থানগুলোয় যেকোনো ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ করার ব্যাপারে আলোচনায় জোর দেওয়া হয়েছে।

বৈঠক শেষে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও জর্ডানের কর্মকর্তারা একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে তিন পক্ষই আকাবায় গত মাসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে করা অঙ্গীকারগুলো আবারও নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে চার মাসের জন্য কোনো ধরনের নতুন বসতি স্থাপন–সংক্রান্ত আলোচনা বন্ধ রাখতে ইসরায়েলের দেওয়া প্রতিশ্রুতিরও উল্লেখ আছে।

আরও পড়ুন

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আকাবায় প্রথম দফার বৈঠকটি হয়েছিল। ওই বৈঠকেও সহিংসতা কমানোর ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন অঙ্গীকার করেছিল। তবে এরপরও সহিংসতা বন্ধ করা যায়নি। গতকাল মিসরের শারম আল শেখ রিসোর্টে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আবারও সে অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে।

ইসরায়েলের দখলকৃত পশ্চিম তীরে সাম্প্রতিক মাসগুলোয় সংঘাতের ঘটনা বাড়তে দেখা গেছে। গতকালের আলোচনায় ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা সহিংসতা, উসকানি ও বিদ্বেষী বক্তব্য প্রতিরোধের জন্য বিশেষ কৌশল নির্ধারণের ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন। এপ্রিলে শারম আল শেখ রিসোর্টে অনুষ্ঠেয় পরবর্তী বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হবে।

তবে বিশেষ কৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়নি। যৌথ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রমজান চলাকালে জেরুজালেমের পবিত্র স্থানগুলোর পবিত্রতা ক্ষুণ্নকারী যে কোনো ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের বিরত থাকতে হবে।

গত বছর ইসরায়েলি বাহিনী পশ্চিম তীরে হাজার হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে। একই বছর দুই শতাধিক ফিলিস্তিনি যোদ্ধা ও সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন। আর ফিলিস্তিনিদের হামলায় ৪০ জনের বেশি ইসরায়েলি ও ৩ জন ইউক্রেনীয় নিহত হয়েছেন।

গত কয়েক বছরে রমজান মাসে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষ হতে দেখা গেছে। বিশেষ করে জেরুজালেমের আল–আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ হয়েছে। আল–আকসা মসজিদ মুসলিমদের কাছে তৃতীয় পবিত্রতম স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। আর ইহুদিদের কাছে আল–আকসা টেম্পল মাউন্ট হিসেবে পরিচিত।

গতকাল হুওয়ারা এলাকায় এক ফিলিস্তিনি বন্দুকধারী এক ইসরায়েলি দম্পতির দিকে ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। এতে ওই দম্পতির একজন আহত হন।

গাজার ক্ষমতায় থাকা ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক দল হামাসের এক সদস্য গত মাসে আকাবায় বৈঠক চলার সময় হুওয়ারা শহরে একটি গাড়িতে দুই ইহুদি বসতি স্থাপনকারীকে গুলি করে হত্যা করেন। ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি ও গাড়িতে হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় এক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।