গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কেন বৈঠক বাতিল করলেন সুনাক

এই পার্থেনন ভাস্কর্য ইস্যুতে বৈঠক বাতিল করলেন সুনাক
ছবি: রয়টার্স

গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোতাকিসের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করে দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে ওই বৈঠক বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে।

গ্রিস অভিযোগ করেছে, পার্থেনন মার্বেল নিয়ে আলোচনা এড়াতে যুক্তরাজ্য এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে লন্ডনে এই দুই নেতার বৈঠকে বসার কথা ছিল।

গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘বৈঠকের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী এ বৈঠক বাতিল করে দিয়েছেন। এতে আমি অত্যন্ত অসন্তুষ্ট, এ কথাই জানাতে চাই।’

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, মিৎসোতাকিসকে বলা হয়েছিল, তিনি সুনাকের বদলে ব্রিটিশ উপপ্রধানমন্ত্রী অলিভার ডাওডেনের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন। কিন্তু সেই প্রস্তাব গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী খারিজ করে দিয়েছেন।

কী আলোচনার কথা বৈঠকে
বৈঠকে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী তাঁদের কয়েক দশকের পুরোনো দাবি ওঠাতেন। সেই দাবি হচ্ছে, লন্ডনে ব্রিটিশ জাদুঘরে থাকা গ্রিসের প্রাচীন ভাস্কর্য ফেরত দিতে হবে।

মিৎসোতাকিস বলেছেন, ‘গ্রিস ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বের সম্পর্ক আছে। আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পরিধি অনেক বড়। পার্থেনন ভাস্কর্য নিয়ে আমাদের অবস্থান পুরোনো এবং সবার তা জানা।’

এই পার্থেনন মার্বেল নিয়ে বিরোধের জেরে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সুনাক বৈঠক বাতিল করেছেন কি না, তা নিয়ে এখন আলোচনা চলছে। বলা হয়ে থাকে, গ্রিস থেকে এই ভাস্কর্য নিয়ে গিয়েছিলেন ব্রিটিশ কূটনীতিক।

গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমার আশা ছিল, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার সময় আমি বিষয়টি তুলব। এ ছাড়া গাজা, ইউক্রেন, জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসনের মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার সুয়োগ পাব। যদি কেউ মনে করে থাকেন, তাঁর অবস্থান যুক্তিসম্মত, তাহলে তো তিনি আলোচনায় ভয় পাওয়ার কথা নয়।’

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ‘গ্রিসের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ন্যাটোতে আমরা একসঙ্গে কাজ করি। আমরা অভিবাসন, মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা, ইউক্রেন সমস্যার সমাধানেও একসঙ্গে কাজ করছি।’

সুনাকের কার্যালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে কোথাও পার্থেনন প্রসঙ্গ নেই। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ব্রিটিশ উপপ্রধানমন্ত্রী এসব বিষয় নিয়ে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করতে পারতেন।’

বলা হয়ে থাকে, উনিশ শতকে ব্রিটিশ কূটনীতিক লর্ড এলগিন এই পার্থেনন ভাস্কর্য লন্ডনে নিয়ে আসেন।

এই ভাস্কর্য আড়াই হাজার বছরের পুরোনো। অ্যাক্রোপোলিসের মন্দিরে এই ভাস্কর্য ছিল। তারই একটা অংশ ২০০ বছর ধরে ব্রিটিশ জাদুঘরে রয়েছে।

গত মার্চে সুনাক জানিয়ে দেন, যুক্তরাজ্য তার আইন পরিবর্তন করবে না। তার অর্থ হলো, পার্থেনন মার্বেল গ্রিসে পাঠানো যাবে না।