শত বছরের পুরোনো বিমানবন্দরে হচ্ছে ৩ হাজার কোটি ডলারের শহর

কানাডার ডাউনসভিউ বিমানবন্দর এখন পরিত্যক্তছবি: নর্থক্রেস্ট ডেভেলপমেন্টের সৌজন্যে

চারদিকে ধু ধু মাঠ। মাঝে একটি রানওয়ে আর একটি ভবন। প্রায় শত বছর আগে বিমানবন্দরটি গড়ে তুলেছিল বিখ্যাত উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘ডি হ্যাভিল্যান্ড কানাডা’। এরপর বহুদিন হয়েছে বিমানবন্দরটি পরিত্যক্ত। এখন সেখানে গড়ে তোলা হচ্ছে বিশাল এক শহর। এতে খরচও কম হবে না। ব্যয় ধরা হয়েছে তিন হাজার কোটি মার্কিন ডলার।

বিমানবন্দরটির নাম ডাউনসভিউ এয়ারপোর্ট। অবস্থান কানাডার টরন্টো শহরের উত্তর–পশ্চিমে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও সেখানে ব্যাপক হারে যুদ্ধবিমান তৈরি করা হয়েছে। এরপর নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে বিমানবন্দরটি কিনে নেয় ‘বম্বার্ডিয়ার’ নামের আরেক উড়োজাহাজ ও মহাকাশযান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। তবে ২০২৪ সালে তারাও সেখান থেকে ব্যবসা গুটিয়ে চলে যায়।

এরপর ২০২৬ সালের শুরুর দিকে বিমানবন্দরটিতে শুরু হচ্ছে ওই শহর নির্মাণের কাজ। ৩৭০ একর জমির ওপর এই শহরে থাকতে পারবেন ৫০ হাজারের বেশি মানুষ। শহরের ৭৫ একর এলাকায় থাকবে সবুজ গাছপালা ও উন্মুক্ত জায়গা। প্রথম ধাপে ২০৩১ সাল পর্যন্ত ৩ হাজার বাড়ি নির্মাণ করা হবে। ৩০ বছর পর নির্মাণকাজ শেষে এটিই হবে উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে বড় আবাসন প্রকল্পগুলোর একটি।

শহরটি নির্মাণ করতে গিয়ে রানওয়ের কিন্তু কোনো ক্ষতি করা হবে না। সেটি শহরের কেন্দ্রেই থাকবে। শহরের মোট সাতটি এলাকাকে যুক্ত করবে এই রানওয়ে। প্রতিটি এলাকায় থাকবে নিজস্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, লাইব্রেরি, দোকানপাট ও কমিউনিটি সেন্টার। এই প্রকল্পের দায়িত্ব পাওয়া প্রতিষ্ঠান নর্থক্রেস্ট ডেভেলপমেন্টের প্রধান ড্রেক গোরিং বলেন, শহরে বিমানবন্দরটির ঐতিহ্য ধরে রাখবে এই রানওয়ে।

বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ রাখার অবকাঠামোও ভাঙা হবে না। বরং সেটি সংস্কার করে তৈরি হবে বাণিজ্যিক ভবন। সেখানে হবে চলচ্চিত্র নির্মাণসহ বিভিন্ন কাজ। পরিবেশের কথা মাথায় রেখে ছাদে লাগানো হবে ঘাস আর গাছপালা। ড্রেক গোরিংয়ের ভাষ্যমতে, বিমানবন্দরে থাকা স্থাপনাগুলো না ভেঙে যদি সেগুলো আবার কাজে লাগানো যায়, তাহলে কার্বন নিঃসরণ কমবে, বাঁচবে প্রকৃতিও।