মালালা ইউসুফজাইকে আবার হত্যার হুমকি

মালালা ইউসুফজাই
ফাইল ছবি

শান্তিতে নোবেলজয়ী পাকিস্তানের নারীশিক্ষা আন্দোলনের কর্মী মালালা ইউসুফজাইকে আবারও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। আগে যেই ব্যক্তি হামলা চালিয়েছিলেন, সেই ব্যক্তিই এবার হুমকি দিয়েছেন।

পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবানের (টিটিপি) সাবেক মুখপাত্র এহসানউল্লাহ এহসান ২০১২ সালে মালালার ওপর হামলা করেছিলেন। গতকাল বুধবার টুইটারে আবারও তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে মালালাকে হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘পরেরবার, আর কোনো ভুল করা হবে না।’

হুমকি পাওয়ার পর মালালা পাকিস্তান সেনাবাহিনী (ডিজিআইএসপিআর) ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কাছে প্রশ্ন তুলে এর ব্যাখ্যা চেয়েছেন। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনালের (এএনআই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

টুইটারে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কাছে প্রশ্ন তুলে মালালা বলেন, তাঁর ওপর হামলাকারী এহসান কীভাবে সরকারি হেফাজত থেকে পালিয়ে গেলেন? তিনি বলেন, ‘টিটিপির সাবেক এ মুখপাত্র আমার ওপর এবং অসংখ্য নিরীহ মানুষের ওপর হামলার দায় স্বীকার করেছেন। এই ব্যক্তি এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানুষকে হুমকি দিচ্ছেন। তিনি কীভাবে পালালেন?’

এদিকে মালালাকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় টুইটার কর্তৃপক্ষ গতকাল বুধবার এহসানউল্লাহ এহসানের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে।

পাকিস্তানের প্রত্যন্ত সোয়াত উপত্যকায় জন্ম নেওয়া মালালা তালেবানের বাধার পরও নারীশিক্ষা বিস্তারে কাজ করে যাওয়ায় ২০১২ সালে জঙ্গিরা তাঁকে গুলি করে।

মালালাকে গুলি করার বিষয়টি স্বীকার করেন এহসান। পরে ২০১৪ সালে সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন মালালা।

গত বছরের ১১ জানুয়ারি এহসান সরকারি হেফাজত থেকে পালিয়ে গেলে পাকিস্তানে এ নিয়ে শোরগোল ওঠে। দেশটির বিরোধী দলের পক্ষ থেকে একে সরকারের অযোগ্যতা হিসেবে তুলে ধরা হয়। গত বছরের জানুয়ারিতে ফাঁস হওয়া এক অডিও বার্তায় এহসান বলেন, তিনি পাকিস্তানের জেল থেকে পালাতে সক্ষম হয়েছেন। তবে ওই ঘটনা পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়নি।

ওই সময়ে এহসান এক অডিও বার্তায় বলেন, ‘আমি এহসানউল্লাহ এহসান। তেহরিক-ই-তালিবানের সাবেক মুখপাত্র। আমি ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে বিশেষ চুক্তিতে আত্মসমর্পণ করি। প্রায় তিন বছর ওই চুক্তির প্রতি আমি সম্মান দেখিয়েছি। কিন্তু পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ চুক্তি লঙ্ঘন করে আমার সন্তানসহ আমাকে জেলে আটকে রাখে।’

পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে করা চুক্তির বিষয়টি পরে বিস্তারিত জানানোর কথাও বলেন তিনি।