করাচির পুলিশ কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় নিরাপত্তা ঘাটতি নিয়ে প্রশ্ন

শুক্রবার পাকিস্তানের করাচি পুলিশপ্রধানের কার্যালয়ে হামলা হয়
ছবি: এএফপি

পাকিস্তানের করাচিতে পুলিশের কার্যালয়ে বন্দুকধারীর হামলার ঘটনায় ভবনটির নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ধারণা করা হচ্ছে, নিরাপত্তাঘাটতির কারণে সেখানে হামলা চালানো সম্ভব হয়েছে। এমন অবস্থায় নিরাপত্তাসংক্রান্ত প্রশাসন এবং প্রাদেশিক সরকার এসব স্থাপনার নিরাপত্তাব্যবস্থা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গতকাল শুক্রবার পাকিস্তানের করাচি পুলিশপ্রধানের কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় তিন জঙ্গিসহ সাতজন নিহত হন। প্রায় চার ঘণ্টার অভিযানের পর শুক্রবার রাতে পুলিশপ্রধানের কার্যালয় জঙ্গিমুক্ত ঘোষণা করা হয়।

করাচির পুলিশ কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় সেখানকার নিরাপত্তাব্যবস্থা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন যে হামলার কারণ খুঁজতে হলে নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখাসহ এ–সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

প্রাদেশিক প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ এক সদস্যের কাছে ডনের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল নিরাপত্তাঘাটতির কারণে পুলিশ কার্যালয়ে হামলা হয়েছে বলে তিনি মনে করেন কি না। জবাবে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘এমনটাই (গুরুতর নিরাপত্তাঘাটতি) মনে হচ্ছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘সন্দেহ নেই, আমাদের পুলিশ বাহিনীকে বড় ধরনের লড়াই আর ধকলের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। তবে আমাদের নিরাপত্তা কার্যালয় ও ভবনগুলো কতটা নিরাপদ তা পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।’

সিটিজেনস–পুলিশ লিয়াজোঁ কমিটির প্রধানও বলছেন, নিরাপত্তাঘাটতি থাকার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া যায় না।

তবে লিয়াজোঁ কমিটির প্রধান মনে করেন সিন্ধুর প্রাদেশিক সরকারের পাশাপাশি করাচি পুলিশ ও নিরাপত্তা প্রশাসন নিরাপত্তাজনিত সব ফাঁকফোকর খুঁজে বের করবে এবং সমস্যার সমাধান করবে।

নিরাপত্তা সংস্থা ও প্রাদেশিক প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা ব্যক্তিরা মনে করেন, করাচির পুলিশ কার্যালয়ে হামলার ঘটনাটি প্রতীকী। এর মধ্য দিয়ে জঙ্গিরা কর্তৃপক্ষকে পরবর্তী হামলার জন্য প্রস্তুত হওয়ার বার্তা দিতে চাইছে।

সিটিজেনস-পুলিশ লিয়াজোঁ কমিটির (সিপিএলসি) সাবেক প্রধান এবং সিন্ধুর স্বরাষ্ট্র বিভাগের পরামর্শক শারুফদ্দিন মেমন বলেন, ‘এটি সন্ত্রাসীদের নিত্যনৈমিত্তিক কোনো তৎপরতা নয়। এটা উপেক্ষা করা যায় না। সুতরাং আমি মনে করি নিরাপত্তাব্যবস্থা পুনর্মূল্যায়নের জন্য অনেক কাজ করতে হবে। আমাদের স্থাপনাগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সন্ত্রাসবিরোধী পদক্ষেপ নেওয়া এবং আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা—সবকিছু অবশ্যই আবারও পরীক্ষা করে দেখতে হবে।’

মেমন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, তারা যদি এসব নিরাপত্তা কার্যালয়ে হামলা চালাতে পারে, তাহলে জনসমাগমের এলাকাগুলো কতটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

শারুফদ্দিন মেমন মনে করেন, পরিপূর্ণ আস্থা নিয়ে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে হলে একটি যথাযথ নিরাপত্তা পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।