ইদ্দত মামলায় খালাস পেলেও স্বস্তি বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবির। পাকিস্তানের একটি আদালত আজ রোববার তোশাখানা মামলায় ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রীর আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
ইদ্দত বা ইসলামিক বিধিবহির্ভূত বিবাহ মামলায় ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী খালাস পাওয়ার এক দিন পরেই তাঁদের রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। কিন্তু কারাগারের ফটকেই ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (এনএবি) তোশাখানা–সংক্রান্ত নতুন এক মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করে।
গতকাল শনিবার পাকিস্তানের একটি জেলা ও দায়রা জজ আদালত তাঁদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইদ্দত মামলা বাতিল করেন। অতিরিক্ত দায়রা জজ মুহাম্মদ আফজাল মাজোকা সংক্ষিপ্ত আদেশে তাঁদের খালাস দেন।
ইমরান খান ও বুশরা বিবির বিরুদ্ধে অনৈসলামিকভাবে বিয়ের অভিযোগ আনেন সাবেক স্বামী খাওয়ার মানেকা। তিনি তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। এ মামলায় তাঁদের সাত বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ রুপি জরিমানা হয়েছিল।
ইদ্দত মামলার রায় ঘোষণার পরপরই পাকিস্তানের দুর্নীতি দমন–সংক্রান্ত সংস্থার উপপরিচালক মহসিন হারুনের নেতৃত্বে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে তোশাখানার উপহার বিক্রিতে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত সপ্তাহে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ বেশ উজ্জীবিত ছিল। দলটি সুপ্রিম কোর্টে বড় ধরনের জয় পায়। দেশটির সর্বোচ্চ আদালত ঘোষণা করেন, গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে পিটিআইয়ের প্রতীক কেড়ে নেওয়া হলেও দলটি নিষিদ্ধ নয়। দলটি সংরক্ষিত আসন পাওয়ার যোগ্য। এরপর ইমরান খানও ইদ্দত মামলায় খালাস পেলে দলটির নেতা ও সমর্থকেরা ইমরান খানের মুক্তির প্রতীক্ষায় ছিলেন। ইমরান খান খালাস পেলে দলটির জন্য আরও বড় ধরনের উদ্দীপনা তৈরি হতে পারত।
তবে পাকিস্তানের অ্যাকাউন্টেবিলিটি (জবাবদিহি) আদালত গতকাল এনএবির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তাঁদের ২২ জুলাই আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
ইমরান খানের আইনজীবী জহির আব্বাস চৌধুরী গণমাধ্যমে বলেন, ইমরান ও বুশরা বিবির ১৪ দিনের রিমান্ড চেয়েছিল এনএবি।
গত বছরের আগস্ট থেকে তোশাখানা দুর্নীতি মামলাসহ ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের আগে ইমরানের বিরুদ্ধে আরও কিছু মামলা করা হয়েছিল। নাশকতার মামলায় লাহোর, রাওয়ালপিন্ডি ও ফয়সালাবাদে নথিভুক্ত একাধিক মামলায় জামিন পেয়েছেন ইমরান। তবে সন্ত্রাসবিরোধী আদালত (এটিসি) গত সপ্তাহে নাশকতার একটি মামলায় তাঁর জামিন বাতিল করেছেন।
গত জুনে সাইফার (তারবার্তা) মামলায় খালাস পান ইমরান। তবে বেআইনিভাবে রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রি–সংক্রান্ত দুটি মামলার একটিতে তাঁকে ১৪ বছর এবং অন্যটিতে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। উভয় মামলার সাজা হাইকোর্ট স্থগিত করেছেন। তবে এর বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে।