পাকিস্তানে ১৬ জনকে সেনা হেফাজতে দিতে নির্দেশ

৯ মে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় একটি বাড়িতে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা। লাহোর ২০২৩
ফাইল ছবি: রয়টার্স

৯ মে লাহোরে এক শীর্ষ সেনা কর্মকর্তার বাড়ি জিন্নাহ হাউসে তাণ্ডব চালানোর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার ১৬ জনকে একজন সামরিক কমান্ডিং কর্মকর্তার হাতে তুলে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন লাহোর সন্ত্রাসবিরোধী আদালত। শহরের ক্যাম্প জেলের সুপারিনটেনডেন্টকে এ নির্দেশ দেওয়া হয় বলে ডনের খবরে বলা হয়।

আজ ৫৪ ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার্স ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং কর্মকর্তা ইরফান আখতার আদালতের কাছে দুটি পৃথক ধারায় ওই সন্দেহভাজনদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, প্রাথমিক তদন্তে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এ সময় ডেপুটি প্রসিকিউটর জেনারেল কোনো বিরোধিতা না করে আদালতকে উপযুক্ত আদেশ দিতে অনুরোধ জানান। পরে আদালত এ আদেশ দেন।

৯ মে পাকিস্তান তেহরিক-ই–ইনসাফের প্রধান ইমরান খানকে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে আধা সামরিক বাহিনীর রেঞ্জার্সের সদস্যরা গ্রেপ্তার করলে দেশজুড়ে বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভ চলাকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো বিভিন্ন স্থানের দাঙ্গা, ভাঙচুরের ফুটেজে ভেসে যায়। ওই সব ফুটেজে জিন্নাহ হাউস ও রাওয়ালপিন্ডিতে সেনাপ্রধানের দপ্তরে ভাঙচুর, আগুন দেওয়ার ছবিও ছিল।

সেদিনই সেনাবাহিনী দিনটিকে ‘কালো অধ্যায়’ বলে মন্তব্য করে এবং ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পর সামরিক আইনে (পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্ট এবং অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট) দাঙ্গাকারীদের বিচার করা হবে ঘোষণা দেয়।

এ নিয়ে মানবাধিকারকর্মী ও অধিকার সংস্থাগুলোর সমালোচনার মধ্যে এক দিন পরই বিষয়টি জাতীয় নিরাপত্তা কমিটিতে অনুমোদন পায়। পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ে দেশের প্রধান সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী ফোরাম এই কমিটি।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ স্পষ্ট করে বলেন যে শুধু বেসামরিক অবকাঠামো ভাঙচুরের অভিযোগে যাঁরা অভিযুক্ত, তাঁদের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বিচার করা হবে। সামরিক স্থাপনা ভাঙচুরের মামলার বিচার হবে সামরিক আইনে। এরপরই পিটিআইও সামরিক আইনে বেসামরিক নাগরিকদের বিচার করতে ফেডারেল সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়।

ইমরান খানের আইনজীবীদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ একজন সদস্য আজহার সিদ্দিক রয়টার্সকে বলেন, এই ১৬ জনের মধ্যে ১ জন পিটিআইয়ের সদস্য। ইমরান খান আগামী প্রাদেশিক নির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী হিসেবে ঠিক করে রেখেছেন।

আজহার সিদ্দিক বলেন, এই ১৬ জনের বিষয়ে সামরিক বাহিনী তদন্ত করে সামরিক আদালতে বিচার করবে। সামরিক আইনের বিচারের ধরন বেসামরিক বিচারব্যবস্থা থেকে পৃথক। এখানে বাইরের মানুষের, এমনকি গণমাধ্যমেরও প্রবেশাধিকার নেই। মানবাধিকারকর্মীরা বরাবরই এ গোপনীয় বিচারের সমালোচনা করে আসছেন।