পাকিস্তানে সেনা ঘাঁটিতে আত্মঘাতী হামলা, নিহত ২৩
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে একটি সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২৩ সেনা নিহত হয়েছেন। দেশটির তালেবান–সংশ্লিষ্ট জঙ্গি গ্রুপ তেহরিক–ই–জিহাদ পাকিস্তান (টিজেপি) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
স্থানীয় এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, খাইবার পাখতুনখাওয়ায় আফগান সীমানাঘেঁষা ডেরা ইসমাইল খান জেলায় গতকাল সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘যখন হামলা হয়, তখন ঘাঁটিতে অনেকেই ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন এবং তাঁদের শরীরে ছিল বেসামরিক পোশাক। তাই আমরা এখনই নিশ্চিত হতে পারছি না যে যাঁরা মারা গেছেন, তাঁরা সবাই সেনা সদস্য কি না।’
এদিকে আজ মঙ্গলবার পাকিস্তান আন্তঃবাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে জানায়, ছয় সদস্যের একটি আত্মঘাতী জঙ্গি স্কোয়াড এ হামলা চালায়। সেনাদের পাল্টা আক্রমণে তাদের সবাই নিহত হয়েছে।
একটি স্কুল ভবনকে অস্থায়ী সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। আত্মঘাতী গাড়ি বিস্ফোরণে ভবনটির তিনটি কক্ষ ধসে পড়েছে। সেই ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে মরদেহ টেনে তোলার চেষ্টা চলছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তেহরিক-ই-জিহাদ পাকিস্তান জানায়, সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এক যোদ্ধা সেনাদের ওপর ‘শাহাদাত হামলা’ চালান। এরপর অন্যরাও সেই ভবনে ব্যাপক হামলা চালান।
২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোয় জঙ্গি হামলার ঘটনা নাটকীয়ভাবে বেড়ে গেছে।
পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের তথ্যমতে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় হামলার ঘটনা ৮০ শতাংশ বেড়েছে।
ইসলামাবাদের অভিযোগ, শত্রুপক্ষ সীমান্তের ওপারে ‘অভয়ারণ্য’ থেকে নিজেদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। তবে এমন অভিযোগ তালেবান সরকার বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।
তালেবানের পাকিস্তান শাখা বর্তমানে ইসলামাবাদের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি, যা তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) নামে পরিচিত।
গত জানুয়ারিতে পেশোয়ার শহরের উত্তর–পশ্চিমে পুলিশ সদর দপ্তরের একটি মসজিদে বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছিল। এতে ৮০ জনের বেশি পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছিলেন। ওই ঘটনায়ও টিটিপি জড়িত ছিল।