‘লন্ডনি’ পরিকল্পনায় আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়: ইমরান খান

ইমরান বলেছেন, লন্ডনি পরিকল্পনা অনুযায়ী তাঁকে গ্রেপ্তার। সরকার তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে ১০ বছর কারাগারে রাখতে চাইছে।

ইমরান খানের জামিনের প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টের সামনে অবস্থান ধর্মঘটে জেইউআইয়ের প্রধান ফজলুর রহমান (বাঁয়ে), পিএমএল-এনের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নওয়াজসহ অন্য নেতারা। গতকাল ইসলামাবাদে
ছবি: রয়টার্স

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের চেয়ারম্যান ইমরান খান গতকাল সোমবার ক্ষমতাসীন জোটের বিরুদ্ধে তাঁকে গ্রেপ্তার করার পেছনে হাত রয়েছে বলে আবার অভিযোগ করেছেন। ইমরান অভিযোগ করেছেন, তাঁকে গ্রেপ্তারের ঘটনা লন্ডনের পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটেছে, ‘তাঁরা লন্ডনি পরিকল্পনার অধীনে আমাকে আগামী ১০ বছরের জন্য কারাগারে রাখতে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন ব্যবহার করতে চাইছে।’

উল্লেখ্য, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ বর্তমানে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থান করছেন। নওয়াজ শরিফ পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের ভাই। এদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কয়েক ঘণ্টার গ্রেপ্তার নাটকের পর গত শুক্রবার দুই সপ্তাহের জামিন পেয়েছেন। এরপর তিনি অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন সরকার তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবিকে কারাগারে রেখে তাঁকে অপমান করার পরিকল্পনাও করেছে।

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান
ফাইল ছবি: এএফপি

১১ মে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় ইমরান খানের গ্রেপ্তার ‘বেআইনি’ ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়ালের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে ক্ষমতাসীন পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম)। এ ঘটনায় পিডিএমকে আক্রমণ করে কয়েকটি টুইট করেছেন ইমরান। তিনি বলেছেন, ‘আমি কারাগারে থাকাকালীন সহিংসতার অজুহাত দিয়ে তারা বিচারক, জুরি এবং ফাঁসিদাতার ভূমিকা গ্রহণ করেছে।’

কয়েক মাস ধরে পিটিআই নেতা ইমরান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সোচ্চার। গত বছর লংমার্চের সময় তাঁর ওপর হামলায় পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তারা জড়িত ছিলেন, এমন অভিযোগ তোলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ক্ষমতাসীন পিডিএমের অভিযোগ, ইমরান খানকে অযাচিত সুবিধা দিয়েছে বিচার বিভাগ। এ কারণে তারা প্রধান বিচারপতি বান্দিয়ালের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের বাইরে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

গত শুক্রবার আটটি মামলায় ইমরান খানকে জামিন দেন আদালত। তবে ইমরানের আশঙ্কা, তাঁকে গ্রেপ্তারে অন্য মামলাগুলো সামনে আনতে পারে সরকার। ইমরান খান বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বাইরে নাটক করা হচ্ছে, যাতে প্রধান বিচারপতি সংবিধান অনুযায়ী রায় দিতে না পারেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, বর্তমান জোট সরকার আবার দেশে ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে।

পিডিএমের শীর্ষ নেতারা অবস্থান কর্মসূচিতে

পাকিস্তানে ডন পত্রিকার খবরে বলা হয়, গতকাল সুপ্রিম কোর্টের বাইরে প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়ালের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেন পিএমএল–এনের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নেওয়াজ, জেইউআই–এঢের প্রধান ফজলুর রহমানের মতো জ্যেষ্ঠ নেতারা। অন্যদিকে পিটিআইয়ের সমর্থকেরা পেশোয়ারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিচার বিভাগের সমর্থনে মিছিল করেছেন।