ইমরান খানের মনোনয়নপত্র বাতিল ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ’
পাকিস্তানে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। একে ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ’ আখ্যা দিয়ে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইমরানের প্রতিষ্ঠিত দল পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফ (পিটিআই)। দলটি বলছে, এ সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
আসন্ন জাতীয় পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে পাঞ্জাবে দুটি আসনে মনোনয়নপত্র তুলেছিলেন ইমরান খান। তবে গতকাল শনিবার পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) পাঞ্জাব অঞ্চলের কর্মকর্তারা এই দুই আসনে ইমরান খানের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন।
পিটিআইয়ের তথ্যবিষয়ক সম্পাদক রউফ হাসান নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্তকে ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ’–এ সঙ্গে তুলনা করেছেন। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সরকারের হস্তক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। একই সঙ্গে এ নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপও কামনা করেন তিনি।
এদিকে পিটিআইয়ের মহাসচিব ওমর আইয়ুব খান গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় দলের পক্ষে বিবৃতিতে নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা ও প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে পিটিআইয়ের মুখোমুখি হওয়ার সাহস না থাকায় এসব অসদুপায় অবলম্বন করছেন ক্ষমতাসীনেরা।
ওমর আইয়ুব খান আরও বলেন, নির্বাচনের আগেই ভোট চুরির এ রকম অপচেষ্টা পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। এতে করে দেশে রাজনৈতিক অচলাবস্থা যেমন তৈরি হতে পারে, একই সঙ্গে জাতীয় ঐক্যের মধ্যেও ফাটল ধরাতে পারে কমিশনের এমন সিদ্ধান্ত।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে ইমরান খান লাহোরের এনএ–১২২ ও মিয়ানওয়ালির এনএ–৮৯ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তবে ইমরানের মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও লাহোর এনএ–১৩০ আসনে ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজ (পিএমএল–এন) প্রধান নওয়াজ শরিফের মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন।
ইমরানের মনোনয়নপত্র বাতিল নিয়ে এনএ–১২২ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইকবালের ভাষ্য, আসনটিতে ইমরানের মনোনয়নপত্র নিয়ে তিনটি আপত্তি তুলেছিলেন পিএমএল–এন নেতা মিয়াঁ নাসের। সেগুলো হলো—যিনি ইমরানের পক্ষে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন, তিনি এই আসনের ভোটার নন; অসততার অভিযোগে সাজা খাটছেন ইমরান এবং সাজা হওয়ায় পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অযোগ্য ইমরান আর আদিয়ালা কারাগারে বন্দী ইমরানের মনোনয়নপত্রে সত্যায়ন করেননি কারাগারপ্রধান। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিলের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পিটিআইয়ের মহাসচিব ওমর আইয়ুব খান বলেন, ‘আমি আগেই ধারণা করেছিলাম যে তুচ্ছ কারণে পিটিআইয়ের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। চাপের মুখে রিটার্নিং কর্মকর্তারা সামনে পিটিআইয়ের আরও অনেক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করবেন বলে মনে করি।’