পাকিস্তানে সরকার গঠনে পিপিপি ও পিএমএল-এন মতৈক্য

পাকিস্তানের নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শাহবাজ শরিফফাইল ছবি: এএফপি

কয়েক দিনের দর-কষাকষির পর অবশেষে পাকিস্তানে কেন্দ্রীয় সরকার গঠনে একমত হয়েছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন পিএমএল-এন নেতা শাহবাজ শরিফ। আর প্রেসিডেন্ট হবেন পিপিপির কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলী জারদারি।

মঙ্গলবার রাতে ইসলামাবাদে জারদারির বাসভবনে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি এ ঘোষণা দেন। ফলে ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার গঠনে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা কাটল।

বিলাওয়াল বলেন, ‘পিপিপি এবং পিএমএল-এন প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন অর্জন করেছে এবং এখন আমরা সরকার গঠনের অবস্থানে আছি।’ তিনি বলেন, পিপিপি ও পিএমএল-এন জোট সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। পিএমএল-এন নেতা শাহবাজ শরিফ আবারও দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন।

বিলাওয়াল আরও বলেন, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) ও সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিল কেন্দ্রে সরকার গঠনের মতো সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।

সংবাদ সম্মেলনে শাহবাজ শরিফ বলেন, আসিফ আলি জারদারিকে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রয়োজনীয় ভোট তাঁদের আছে। এ সময় মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট-পাকিস্তানসহ অন্য মিত্র দলগুলোকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।

এদিকে পিএমএল-এন ও পিপিপির সরকার গঠনের কড়া সমালোচনা করেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই। এই সরকারকে বিগত পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) জোট সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদ বলে উল্লেখ করেছে দলটি।

৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে পিটিআই–সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সবচেয়ে বেশি—৯৩ আসনে জয়ী হন। এ ছাড়া নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন ৭৯ ও বিলাওয়ালের পিপিপি ৫৪ আসনে জয়ী হয়।

বিক্ষোভ জোরদার হচ্ছে

এদিকে নির্বাচনে কারচুপির প্রতিবাদে পাকিস্তানে বিক্ষোভ জোরদার হচ্ছে। মঙ্গলবারও দেশটিতে বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে। সিন্ধু প্রদেশে বিক্ষোভ করেছে গণতান্ত্রিক মহাজোট, পিটিআই, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামসহ অন্যান্য দল। খাইবার পাখতুনখাওয়ায় বিক্ষোভ করেছে আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি।

এ ছাড়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিকান্দার সুলতান রাজার অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করেছেন পিটিআই চেয়ারম্যান গহর আলী খান। আদিয়ালা কারাগারের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘কারাগারে খান সাহেবের (ইমরান খান) সঙ্গে সাক্ষাতের পর প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ দাবি করছে পিটিআই। আর এক দিনও তাঁর এই পদে থাকার অধিকার নেই।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ দাবি করেছেন জামায়াত-ই-ইসলামের সিনেটর মুশতাক আহমেদও। সিনেটে দেওয়া বক্তৃতায় গতকাল নির্বাচন কমিশনকে ‘ক্ষমা চাওয়ারও’ আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।