পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অনেক বেশি মদ পান করেন। তাঁর পায়ের হাড়ে কোনো ধরনের ফাটল নেই এবং তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য স্থিতিশীল নয়।
আজ শুক্রবার দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী আবদুল কাদির প্যাটেল ইমরান খানের মেডিকেল রিপোর্টে থাকা তথ্য জানাতে গিয়ে এসব কথা বলেন।
৯ মে গ্রেপ্তার হওয়ার পর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য ইমরান খানকে পিআইএমএস হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে আসা রিপোর্ট সম্পর্কে আজ করাচিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী গণমাধ্যমকর্মীদের বিস্তারিত জানান।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী রিপোর্টের বিস্তারিত জানানোর আগেই বলে নেন এটি ‘সরকারি নথি’। মন্ত্রী বলেন, রিপোর্টে তাঁর পায়ের হাড়ে কোনো ধরনের ফাটল পাওয়া যায়নি। তিনি পাঁচ-ছয় মাস ধরে পায়ে প্লাস্টার করে রেখেছিলেন। কিন্তু মেডিকেল রিপোর্টে সে ধরনের কিছুই পাওয়া যায়নি।
ইমরান দাবি করে আসছেন, গত ৩ নভেম্বর পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদে লংমার্চে ইমরান খানকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ হামলায় ইমরানের পায়ে বেশ কয়েকটি গুলি লেগেছে।
মন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রধানের প্রস্রাবের নমুনাও নেওয়া হয়েছিল। প্রাথমিক রিপোর্টে এতে বিষাক্ত উপাদান পাওয়ার পাশাপাশি তিনি যে অতিরিক্ত মদ পান ও কোকেন নেন, তারও প্রমাণ পাওয়া গেছে।
পাশাপাশি ইমরানের মানসিক স্বাস্থ্য প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, তাঁর কর্মকাণ্ড ও শারীরিক ভাষা ‘একজন সুস্থ মানুষের মতো নয়।’ ‘রিপোর্টে বলা হয়েছে, মানসিকভাবে সুস্থ মানুষ কখনো এমন ধরনের অঙ্গভঙ্গি করে না।’
পিটিআইপ্রধান রাজনীতিতে শালীনতা, রাজনৈতিক সহনশীলতা এবং অন্যদের প্রতি সম্মান দেখানো ভুলে গেছেন উল্লেখ করে প্যাটেল বলেন, ‘আমিও বলছি যে ইমরানের মানসিক অবস্থা ভালো নয়।’
প্যাটেল বলেন, ইমরান খান যা বলেছেন, সেখান থেকে ভিন্ন কথা বলছে তাঁর মেডিকেল রিপোর্ট। রিপোর্টের বিস্তারিত এলে তা পুলিশের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, ‘ইমরান যা করছেন, তা কেবল একজন এজেন্ট বা পাগলই করতে পারে।’
প্যাটেল বলেন, ‘পাঁচজন চিকিৎসকের প্যানেল বলেছে, তাঁর (ইমরান) মানসিক স্থিতিশীলতা নিয়ে প্রশ্ন আছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করবে পিটিআই
ইতিমধ্যে পিটিআই স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দলটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জাতীয় জবাবদিহি ব্যুরো (এনএবি), স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও পিআইএমএস চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমোদন দিয়েছেন। ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতিও শুরু করেছেন দলটির আইনজীবীরা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইমরানের বিরুদ্ধে যত ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্যাটেলের বিরুদ্ধে মানহানিসহ বিভিন্ন আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।