ইমরান খানের বিরুদ্ধে আরও এক মামলা

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান
ছবি: এএফপি

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা হয়েছে। ১১৪ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে ইমরান খান ও পিটিআইয়ের অন্য শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে এ মামলা করেছে পুলিশ। খবর ডনের।

পিটিআই নেতা শাহবাজ গিলকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ২০ আগস্ট রাজধানী ইসলামাবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করে পিটিআই। ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করে ওই বিক্ষোভ সমাবেশ করার অভিযোগ আনা হয় দলটির নেতাদের বিরুদ্ধে।

নিজেদের কাছে থাকা এজাহারের একটি কপির বরাত দিয়ে ডন বলছে, গত সোমবার আবপারা থানায় এজাহারটি করেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মুহাম্মদ আনোয়ার।

আরও পড়ুন

এজাহারে পিটিআই নেতাদের মধ্যে মুরাদ সাঈদ, ফায়সাল জাভেদ খান, শেখ রশিদ আহমেদ, আসাদ উমর, রাজা খুররম নওয়াজ, আলি নওয়াজ আওয়ান, ফায়সাল ভাওদা, শাহজাদ ওয়াসিম, সাদাকাত আলী আব্বাসিসহ আরও কয়েক নেতার নামও উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, ‘ইমরানের নির্দেশে’ ইসলামাবাদের জিরো পয়েন্ট ইন্টারচেঞ্জের কাছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ পিটিআই সমর্থক জড়ো হয়েছিলেন। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা ছিল।

পুলিশ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আনোয়ার বলেন, শাহবাজ গিলের মুক্তি চেয়ে তাঁরা স্লোগান দেন। সড়ক অবরোধ করে তাঁরা বাসিন্দাদের ‘ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি দিয়েছেন’ বলেও এজাহারে অভিযোগ করেন তিনি।

এএসআই আনোয়ার বলেন, সমাবেশের কারণে পথচারীদের ওই এলাকা দিয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে তাঁদের প্রাত্যহিক কাজকর্ম বিঘ্নিত হয়। সমাবেশে অংশ নেওয়া লোকজন মাইক ব্যবহার করে ‘সরকারবিরোধী স্লোগান’ দেন।

আরও পড়ুন

এজাহারে বলা হয়, সমাবেশ চলাকালে ইসলামাবাদ পুলিশ মাইকে ১৪৪ ধারা জারির বিষয়টি ঘোষণা দেয় এবং সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানায়। কিন্তু পিটিআই নেতারা এতে কর্ণপাত করেননি। তাঁরা নেতা-কর্মীদের নিয়ে এফ-৯ পার্কের দিকে যান। সেখানে মাইক ব্যবহার করে স্লোগান দেন।

শাহবাজ গিলকে গ্রেপ্তার ও এআরওয়াই নিউজের লাইসেন্স বাতিল করায় গত সপ্তাহে জনগণকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান ইমরান খান। এর কিছুক্ষণ পরই পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে।

কিন্তু ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে বিপুলসংখ্যক সমর্থক বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেন। বিক্ষোভ মিছিলটি জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে এফ-৯ পার্কে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। সেখানে সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন ইমরান খান।

এদিকে ইসলামাবাদ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও এক বিচারককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে রোববার রাতে ইমরান খানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা করেছে পুলিশ। এ মামলায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অন্তর্বর্তী জামিনে আছেন তিনি।

জেলা ও দায়রা জজ জেবা চৌধুরীকে হুমকির অভিযোগে পিটিআই চেয়ারম্যানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। গতকাল মঙ্গলবার এ নোটিশ জারির পাশাপাশি ৩১ আগস্ট তাঁকে তলব করেছেন আদালত। বিচারক জেবা চৌধুরী গিলের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন।

অন্যদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ গতকাল জিও নিউজকে বলেছেন, কাল আদালত ইমরান খানের জামিন আবেদন খারিজ করে দিলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না সরকারের। তিনি আরও বলেন, ‘সরকার যদি সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে আমরা তাঁকে গ্রেপ্তার করব।’

সন্ত্রাস দমন আইনে করা মামলায় কাল পিটিআই চেয়ারম্যানের অন্তর্বর্তী জামিন শেষ হবে। এদিন আদালতে হাজির হয়ে তিনি আগাম জামিন আবেদন করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।