দেশের স্বার্থে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় জোর পিটিআই নেতাদের

পিটিআই নেতা আলি আমিন গান্দারপুরছবি: আলি আমিনের ফেসবুক থেকে নেওয়া

দেশের স্বার্থে সরকারের সঙ্গে আলোচনার ওপর জোর দিচ্ছেন পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) শীর্ষ নেতারা। বর্তমানে পাকিস্তান যে নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে, তা থেকে উত্তরণে আলোচনার বিকল্প নেই বলে মনে করছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দলটির নেতারা।

আগামী সপ্তাহে সরকারগঠিত বিশেষ কমিটির সঙ্গে পিটিআইয়ের পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে পিটিআইয়ের পক্ষ থেকে তাদের দাবিদাওয়া তুলে ধরা হবে। এর আগে সরকার ও পিটিআইয়ের নেতারা গত ২৩ ডিসেম্বর ও ২ জানুয়ারি বৈঠকে বসেছিলেন।

সরকারের গঠন করা কমিটির সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দারপুর গতকাল ইসলামাবাদে সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশের স্বার্থ আমাদের কাছে অগ্রাধিকার। এ জন্যই আমরা আলোচনায় অংশ নেব।’

বৈঠকে আলোচনা নিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের মন্তব্যের জবাবে গান্দারপুর বলেন, ইসলামাবাদে গত নভেম্বরে পিটিআইয়ের বিক্ষোভে গুলি চালানো হয়েছিল। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী অস্বীকার করতে পারেন না। এ নিয়ে তাঁর মন্তব্য যথাযথ নয়।

গত ২৬ নভেম্বরে ইসলামাবাদে বড় বিক্ষোভ করেছিল পিটিআই। তাতে পুলিশ ধরপাকড় চালায়। পিটিআইয়ের দাবি, ওই সময় তাদের ১৩ সমর্থককে হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের হামলায় আহত হয়েছেন ৫৮ জন। নিখোঁজ রয়েছেন ৪৫ জন। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৫ সদস্য নিহত হয়েছেন।

গান্দারপুর আরও বলেন, সবাইকে একত্র হয়ে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় দেশ থেকে সন্ত্রাসী কার্যক্রম দূর করতে হবে।

এদিকে কারাবন্দী পিটিআইয়ের জ্যেষ্ঠ নেতা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। তিনি বলেন, পিটিআইয়ের জন্য আলোচনার দরকার নেই, তবে দেশের জন্য আলোচনা প্রয়োজন।

লাহোরে সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে হাজির হয়ে কোরেশি সতর্ক করে বলেন, চলমান আলোচনাপ্রক্রিয়া ব্যর্থ হলে তা দেশের গণতন্ত্রের জন্য বিপদ ডেকে আনবে। তিনি বলেন, পাকিস্তান জটিল এক মোড়ে দাঁড়িয়ে। আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। আলোচনার ফল ইতিবাচক না হলে ক্ষমতাসীন সরকারের জন্য তা খারাপ হবে।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, পিটিআই অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে এই আলোচনায় অংশ নিয়েছে। জোট সরকারকে গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি এগিয়ে নিতে হবে।

দ্বিতীয় দফার আলোচনা বিষয়ে জাতীয় পরিষদের স্পিকার আয়াজ সাদিক গত বুধবার বলেন, গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাতের পর পরবর্তী বৈঠকে পিটিআইয়ের পক্ষ থেকে তাদের দাবিদাওয়া তুলে ধরা হবে।

আয়াজ সাদিক বলেন, পিটিআইয়ের পক্ষ থেকে তাঁদের কারাবন্দী নেতা ইমরান খান ও দলটির নেতা–কর্মীদের মুক্তি দাবি করা হচ্ছে।

২৫০ জন কর্মীকে জামিন

এদিকে দ্য ডন–এর এক খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী আদালত গত শুক্রবার ২৬ নভেম্বরে ইসলামাবাদে পিটিআইয়ের বিক্ষোভের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪০০ জনের জন্য ২৫০ জনের জামিন মঞ্জুর করেছেন।

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে বুশরা বিবির নেতৃত্বে পিটিআই দেশটির রাজধানীতে এ বিক্ষোভের আয়োজন করে।