জোট সরকারে যেতে সব পথ খোলা রাখছে পিপিপি

বৈঠকে বসেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা। ১২ ফেব্রুয়ারিছবি: এক্স থেকে নেওয়া

জাতীয় পরিষদের নির্বাচনের পর দোদুল্যমান পরিস্থিতিতে জোট সরকার গঠনের জন্য সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)।

গতকাল সোমবার বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির দল পিপিপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির (সিইসি) বৈঠক হয়। এরপর দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে ‘সব রাজনৈতিক দলের’ সঙ্গে পিপিপি আলোচনা করবে।

জোট সরকার গঠনের জন্য লাহোরে পিপিপির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)। জানা গেছে, ক্ষমতা ভাগাভাগিতে দুই দল রাজি। এমন পরিস্থিতিতে পিপিপির পক্ষ থেকে সব দলের সঙ্গে আলোচনার কথা জানানো হলো।

আরও পড়ুন

সিইসির বৈঠকের পর পিপিপি একটি বিবৃতি দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বৈঠকে এবারের নির্বাচন ও দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দলের নেতারা নিজেদের মতামত তুলে ধরেছেন।

বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে পিপিপির নেতা শেরি রহমান বলেন, ‘আমরা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পরামর্শ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে কালকের (মঙ্গলবার) মধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হবে।’

পিপিপির সিইসির গতকালের বৈঠক পর মুলতবি করা হয়। আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটায় পিপিপির নেতারা আবারও বৈঠকে বসবেন।  

সিইসির বৈঠকের ঠিক এক দিন আগে লাহোরে পিপিপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক হয় পিএমএল-এনের নেতাদের। উদ্দেশ্য, কেন্দ্রে জোট সরকার গঠন। দুই দল জোট গড়তে ঐকমত্যে পৌঁছায়। যদিও আগেই পিএমএল-এনের নেতারা জোট সরকার গড়ার জন্য মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট-পাকিস্তানের (এমকিউএম-পি) সঙ্গেও বৈঠক করেন।

আরও পড়ুন

বৈঠক করতে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির লাহোরের বাসভবনে যায় পিএমএল-এনের একটি প্রতিনিধিদল। এই দলের নেতৃত্বে ছিলেন নওয়াজ শরিফের ভাই ও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। বৈঠকে পিপিপির পক্ষ থেকে ছিলেন দলের চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো এবং তাঁর বাবা, দলের কো-চেয়ারম্যান ও পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি।

বলা হচ্ছে, ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর পিপিপি ও পিএমএল-এনের নেতাদের মধ্যে এটি দ্বিতীয় বৈঠক। এর আগে নির্বাচনের পরদিন পাঞ্জাবের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মহসিন নাকভির বাসভবনে দুই দলের নেতাদের আরেকটি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে ক্ষমতা ভাগাভাগির বিষয়ে নওয়াজ শরিফের অবস্থান পিপিপির নেতাদের কাছে পৌঁছে দেয় পিএমএন-এল।

আরও পড়ুন

জোট সরকার গঠনের বিষয়ে একমত হলেও পিপিপি একটি বিষয়ে এখনো অনড়, আর তা হলো—প্রধানমন্ত্রীর পদ। দলটি পিএমএল-এনের কাউকে নয় বরং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায়।

এ বিষয়ে পিপিপির মুখপাত্র ফয়সাল করিম কুন্দি গতকাল বলেছেন, ‘বিলাওয়ালকে যদি প্রধানমন্ত্রী বানানো না হয়, তাহলে জাতীয় পরিষদে পিপিপির বিরোধী দলের আসনে বসা উচিত হবে।’

যদিও এমন দাবি মানতে নারাজ পিএমএল-এনের নেতা ইরফান সিদ্দিকী। বেসরকারি একটি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘জাতীয় পরিষদে একক দল হিসেবে সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হয়েছে পিএমএল-এন। তাই প্রধানমন্ত্রী আমাদের দল থেকেই হওয়া উচিত।’

আরও পড়ুন

ইরফান সিদ্দিকী আরও বলেন, পিএমএল-এন আশা করছে, সব দল ও জোট গণতান্ত্রিক রীতি-মূল্যবোধ মেনে চলবে।

এদিকে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে, জোট সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রীর পদ ভাগাভাগি করার চিন্তাভাবনা করছে পিপিপি ও পিএমএল-এন। সরকারের পাঁচ বছরের মেয়াদে পিএমএল-এন তিন বছর ও পিপিপি দুই বছর—এভাবে দুই ভাগে প্রধানমন্ত্রিত্ব ভাগাভাগির সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন