পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে তরুণকে থানা থেকে ছিনিয়ে নিয়ে হত্যা

ধর্ম অবমাননার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে হত্যার আগে থানায় হামলা চালান বিক্ষুব্ধ লোকজন
ছবি: টুইটার ভিডিও থেকে নেওয়া

পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে এক ব্যক্তিকে থানা থেকে ছিনিয়ে নিয়ে হত্যা করেছেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। আজ শনিবার দেশটির পাঞ্জাব প্রদেশের নানকানা সাহিব শহরে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পাকিস্তান পুলিশের মুখপাত্র মুহাম্মদ ওয়াকাস বলেন, নিহত ব্যক্তির নাম মুহাম্মদ ওয়ারিস। বয়স বিশের কোঠায়। আজ পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। পরে পুলিশ তাঁকে থানায় নিজেদের হেফাজতে নেয়।

এরপর বিক্ষুব্ধ লোকজন ওই থানায় হামলা চালান। এ সময় মুহাম্মদ ওয়ারিসকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় তাঁরা। পরে তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ওয়ারিসের শরীর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

মুহাম্মদ ওয়াকাস বলেন, থানায় পুলিশ সদস্যদের সংখ্যা সে সময় কম ছিল। এ কারণে তাঁরা হামলাকারীদের ঠেকাতে পারেননি। তবে তাঁরা মুহাম্মদ ওয়ারিসের শরীরে আগুন দেওয়া ঠেকাতে পেরেছিলেন।

থানায় হামলা ও ওয়ারিসকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেছে পুলিশ। সেখানে দেখা গেছে, রাস্তা দিয়ে এক ব্যক্তিকে পা ধরে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে আসা হচ্ছে। একপর্যায়ে তাঁর পোশাক খুলে ফেলা হয় এবং লাঠি ও ধাতব রড দিয়ে মারধর করা হয়।

এদিকে মুহাম্মদ ওয়ারিসকে হত্যার ঘটনায় পুলিশের একাধিক কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে পাকিস্তান পুলিশ। একই সঙ্গে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।

ধর্ম অবমাননার অভিযোগে হামলার ঘটনা পাকিস্তানে নতুন নয়। ২০২১ সালে দেশটিতে শ্রীলঙ্কার এক নাগরিককে একই অভিযোগ তুলে হত্যা করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় পাকিস্তান ও দেশটির বাইরে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে ওই হত্যাকাণ্ডের দায়ে ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছিলেন পাকিস্তানের আদালত।