পদত্যাগ করা রাওয়ালপিন্ডির সেই কমিশনারকে অজ্ঞাত স্থানে হেফাজতে নিল পুলিশ

কমিশনার লিয়াকত আলী চাতাছবি: এএফপি

পদত্যাগের পর আত্মসমর্পণ করেছেন পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির নির্বাচন কমিশনার লিয়াকত আলী চাতা। গতকাল শনিবার ভোট জালিয়াতির সঙ্গে নিজের জড়িত থাকার ব্যাপারে সাংবাদিকদের কাছে স্বীকারোক্তি দেন তিনি। নিজের বিচার চান এবং  এরপরই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন তিনি।

পুলিশ তাঁর কার্যালয়টি সিলগালা করে দিয়েছে। তবে স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেছেন, কোনো মামলা না হওয়ায় লিয়াকত চাতাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। তাঁকে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাঁকে অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেছেন, নির্বাচনের দায়িত্বে নিযুক্ত কর্মী ও রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নির্বাচন–সংশ্লিষ্ট উপকরণ ও নথিগুলো নিরাপদে রাখা হয়েছে।

পাকিস্তানে ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে নানা বিতর্ক চলার মধ্যে গতকাল বিস্ফোরক মন্তব্য করেন লিয়াকত আলী চাতা। তিনি রাওয়ালপিন্ডিতে ভোট জালিয়াতিতে যুক্ত থাকার স্বীকারোক্তি দেন। লিয়াকত আরও অভিযোগ করেন, পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন ও প্রধান বিচারপতি কাজী ফায়েজ ইসা ভোট কারচুপিতে জড়িত। তবে নির্বাচন কমিশন ও প্রধান বিচারপতি ফায়েজ ইসা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

লিয়াকত আলী চাতা এমন দিনে অভিযোগটি তুলেছেন, যে দিনটিতে পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফসহ (পিটিআই) আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দল দেশজুড়ে ভোট জালিয়াতির বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

গতকাল লিয়াকত আলী চাতার রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাকিস্তান সুপার লিগ (পিসিএল)–সংক্রান্ত একটি সংবাদ সম্মেলন করার কথা ছিল। তবে তা না করে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলাপ শুরু করেন তিনি। আর এ সময়ই তিনি ভোট জালিয়াতির স্বীকারোক্তি দেন। তাঁর দাবি, বিবেকের দংশনের কারণে তিনি নির্বাচনে অনিয়মের বিষয়গুলো প্রকাশ করেছেন।

লিয়াকত বলেন, পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে রাওয়ালপিন্ডি ডিভিশনের ৬টি জেলার ১৩টি আসনে তিনি ভোট জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এর দায় স্বীকার করে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। নিজেরসহ ভোট জালিয়াতিতে জড়িত সবার শাস্তি দাবি করেন তিনি।

লিয়াকতের দাবি, নির্বাচনে পরাজিত হতে যাওয়া কোনো কোনো প্রার্থীকে জয়ী করা হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিকান্দার সুলতান রাজা ও প্রধান বিচারপতি কাজী ফায়েজ ইসা এসবের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও প্রধান বিচারপতি অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন।