ইমরানের দল প্রাদেশিক পরিষদ থেকে পদত্যাগ করলে নির্বাচনের খরচ কেমন হবে
সম্প্রতি পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, তাঁর দল তেহরিক–ই–ইনসাফ (পিটিআই) সব প্রাদেশিক পরিষদ থেকে সরে দাঁড়াবে। পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে পিটিআই এখনো এ ব্যাপারে চূড়ান্ত ঘোষণা দেয়নি।
ধারণা করা হচ্ছে, আগামী সপ্তাহ নাগাদ এ–সংক্রান্ত ঘোষণা আসতে পারে। পিটিআই যদি সত্যিই পদত্যাগ করে তাহলে এসব আসনে নির্বাচনের খরচ কেমন হতে পারে, তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জিও নিউজ।
পিটিআই আগেই কেন্দ্রীয় পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করেছে। তবে দলটি দুটি প্রাদেশিক পরিষদ ও দুটি প্রশাসনিক ইউনিটের ক্ষমতায় রয়েছে। পিটিআই এবং তাদের মিত্রদলগুলোর পদত্যাগপত্র অনুমোদন পেলে শত শত নির্বাচনী আসন শূন্য হয়ে যাবে। এসব আসন পূর্ণ করতে নির্বাচনই একমাত্র পথ।
ইমরান খানের ঘোষণার পর পিটিআইয়ের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাওয়াদ চৌধুরী এক টুইটার পোস্টে বলেন, জাতীয় পরিষদের ১২৩টি আসন, পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদে ২৯৭টি আসন, খাইবার পাখতুনখাওয়ার প্রাদেশিক পরিষদের ১১৫টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া সিন্ধু ও বেলুচিস্তানে ২৬টি করে আসনে ভোট হবে।
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের একেকটি আসনে নির্বাচন পরিচালনার জন্য ৮ থেকে ১০ কোটি রুপি খরচ হয়ে থাকে। আর প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে আসনপ্রতি খরচ হয় ছয় থেকে সাত কোটি রুপি।
কোনো একটি প্রাদেশিক পরিষদ ভেঙে দেওয়া হলে শুধু ওই সংশ্লিষ্ট পরিষদেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর যদি একটি আসন ফাঁকা হয়, তাহলে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনকে (ইসিপি) ৬০ দিনের মধ্যে ওই আসনে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, পিটিআই ও এর মিত্রদলগুলো যদি জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে তাদের দখলে থাকা সব আসনই শূন্য করে দেয় তাহলে উপনির্বাচন বাবদ খরচ হবে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি রুপি।
গত এপ্রিলে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে বিরোধীদের আনা অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা হারায় ইমরানের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার। তার পর থেকেই তিনি আগাম নির্বাচনের দাবিতে দেশজুড়ে নানা কর্মসূচি পালন করছেন। কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইমরানের নেতৃত্বে গত ২৮ অক্টোবর ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চ শুরু করে পিটিআই।
এর মধ্য ৩ নভেম্বর পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদ শহরে লংমার্চ চলাকালে ইমরানের ওপর সশস্ত্র হামলা হয়। তাঁর পায়ে গুলি লাগে। হামলায় পিটিআইয়ের এক সমর্থক নিহত হন। আহত হন দলটির কয়েকজন নেতা-কর্মী। এ ঘটনার পর লংমার্চ স্থগিত করা হয়। ১০ নভেম্বর আবার লংমার্চ শুরু হয়। চিকিৎসা-বিশ্রাম শেষে গত শনিবার লংমার্চে ফেরেন ইমরান।
তিনি রাওয়ালপিন্ডিতে সমাবেশে অংশ নেন। তিনি দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে ‘লংমার্চ’ কর্মসূচি বন্ধ ঘোষণা করেছেন। একই সঙ্গে ইমরান ঘোষণা দিয়েছেন, আগাম জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে পিটিআইয়ের আন্দোলনের অংশ হিসেবে তাঁর দল দেশটির সব কটি প্রাদেশিক পরিষদ থেকে পদত্যাগ করবে।