জোটের শোকজ নোটিশ ছিঁড়ে ফেললেন বিলওয়াল

পিপিপি চেয়ারম্যান বিলওয়াল ভুট্টো-জারদারি
ফাইল ছবি: রয়টার্স

একটি শোকজ নোটিশকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের সরকারবিরোধী জোট পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (পিডিএম) ভাগ্য ঝুলে পড়েছে। শরিক দল পাকিস্তান পিপলস পার্টিকে (পিপিপি) এ শোকজ নোটিশ পাঠানো হয় জোট থেকে। এ নিয়ে এক দলীয় বৈঠকে ওই শোকজ নোটিশ ছিঁড়ে ফেলেন পিপিপি চেয়ারম্যান বিলওয়াল ভুট্টো-জারদারি। এর মাধ্যমে এ বার্তা দেওয়া হলো যে জোটের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে পারস্পরিক শ্রদ্ধার ওপর। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন এ খবর দিয়েছে।

আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি জোট থেকে বের হয়ে যাওয়ায় গত সপ্তাহে একটি ধাক্কা খায় ইসলামি দল জমায়েত উলেমা-ই-ইসলামের নেতা মাওলানা ফজল-উর-রহমানের নেতৃত্বাধীন পিডিএম। এর মধ্যে জোট নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করল পিপিপি।

করাচিতে বিলওয়াল হাউসে গতকাল রোববার পিপিপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির (সিইসি) বৈঠক শুরু হয়। এদিন সন্ধ্যায় বৈঠকটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নানা ইস্যুতে সেই বৈঠক আজ সোমবার পর্যন্ত গড়াল। এ বৈঠকে পুরো দেশ থেকে দলটির ৫০ জন নেতা অংশ নেন।

বৈঠকে বেশ কিছু আলোচনার বিষয় উত্থাপিত হলেও পিডিএমের শোকজ নোটিশ নিয়ে প্রতিক্রিয়া কী হবে, দলের নেতারা জানতে চাইলে উত্তেজনা তৈরি হয়। সে সময় শোকজ নোটিশটি ছিঁড়ে ফেলেন বিলওয়াল।

বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা বলেন, ‘নেতাদের বক্তব্য শুনে নিজের কোনো মতামত প্রকাশ না করে চেয়ারম্যান শোকজ নোটিশটি সরাসরি ছিঁড়ে ফেলেন। তাঁর এমন প্রতিক্রিয়ায় স্বাগত জানিয়ে দলের নেতারা স্লোগান দেন এবং হাত তালি দেন।’

পিপিপির ওই নেতা বলেন, চেয়ারম্যান এর মাধ্যমে স্পষ্ট বার্তা দিলেন, বিরোধী দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা থাকতে হবে এবং কোনো দল অন্য কোনো দলের নীতি, আদর্শ ও কৌশলে হস্তক্ষেপ করার অধিকার রাখে না। এটা সহ্য করা হবে না। ফলে পিডিএমের এ নোটিশের নৈতিক কোনো ভিত্তি নেই।

দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের খবরে বলা হয়, সিনেটে বিরোধীদলীয় নেতার পদের জন্য ইউসুফ রাজা গিলানিকে মনোনয়ন দেওয়া এবং পিটিআই সরকার নেতৃত্বাধীন জোটের বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টিকে (বিএপি) সমর্থন দেওয়ায় পিপিপিকে এ শোকজ নোটিশ পাঠায় পিডিএম জোটের সেক্রেটারি জেনারেল শাহিদ খাকান আব্বাসি। পিপিপি নেতা গিলানি ও পিএমএল-এনের আব্বাসি দুজনই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

রোববারের বৈঠকে পিপিপির নেতারা বলেন, ‘লাড়কানায় সিনেট নির্বাচনে আমাদের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন মাওলানা সাহেবের দল, আমরা তো প্রতিবাদ জানায়নি, এমনকি নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল-এন যখন পাঞ্জাবে পিটিআইর সঙ্গে হাত মেলাল, তখনো আমরা কিছু বলিনি।’

পিডিএমের সাম্প্রতিক নীতি ও পদক্ষেপ নিয়ে পিপিপির অনেক নেতা একমত না। তবে জোটে অবস্থান নিয়ে এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না দলটি। বৈঠক শেষে এ নিয়ে জানা যাবে। কিছু নেতা মনে করেন, এখনই এএনপির মতো সিদ্ধান্তে যাচ্ছে না পিপিপি। গিলানিকে সিনেটে সমর্থন দেওয়ায় এএনপিকেও শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছিল পিডিএম, যার প্রতিবাদে জোট থেকে বেরিয়ে যায় দলটি।