নোবেল শান্তিতে মনোনয়ন পেলেন পাকিস্তানের ক্ষুদ্রঋণের আমজাদ

ড. আমজাদ সাকিব
ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

পাকিস্তানে সুদবিহীন ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি আখুওয়াত ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ড. আমজাদ সাকিব। দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করে যাচ্ছেন। নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তাঁকে। মানবিক কাজের মধ্য দিয়ে দারিদ্র্য বিমোচনে অবদান রাখায় মনোনয়নের তালিকায় তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। খবর দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।

২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে ৩৪৩ প্রার্থীকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২৫১ জন ব্যক্তি এবং ৯২টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদন অনুযায়ী এ তালিকায় নাম রয়েছে ড. আমজাদেরও।

দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আখুওয়াত ফাউন্ডেশন চেয়ারম্যান আমজাদ বলেন, ‘পুরস্কার পাওয়ার জন্য আমি কাজগুলো করিনি, এগুলো পুরোপুরিভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য করা। বিদেশের কোনো কর্মকর্তা হয়তো পুরস্কারের জন্য আমার নাম সুপারিশ করেছেন। মানবতার জন্য আমি যে কাজগুলো করি, তা বিশ্বজুড়ে অনেক মানুষের কাছেই পরিচিত। তবে পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই।’

সুদ ও জামানতবিহীন ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি চালুর জন্য যে পাঁচ ব্যক্তি র‌্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার পেয়েছেন, তাঁদেরই একজন আমজাদ সাকিব। ঋণের অর্থ বিতরণের জন্য প্রার্থনার জায়গাগুলোকে ব্যবহার করেন আমজাদ। তাঁর বিশ্বাস, মানুষের দয়া ও সংহতির মধ্য দিয়ে দারিদ্র্য বিমোচনের পথ খুঁজে পাওয়া সম্ভব।

আখুওয়াতের যাত্রা শুরুর পর প্রায় দুই দশকে এটি দেশের সবচেয়ে বড় ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি ৯০ কোটি ডলার পরিমাণ অর্থ ঋণ দিয়েছে। ঋণ পরিশোধের হারও শতভাগ।

কিং এডওয়ার্ড মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করার পর ১৯৮৫ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন আমজাদ। পাঞ্জাব সরকারের গ্রাম উন্নয়ন ও ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি পাঞ্জাব রুরাল সাপোর্ট প্রোগ্রামসহ (পিআরএসপি) সরকারের উচ্চপর্যায়ের বিভিন্ন পদে নিয়োজিত ছিলেন তিনি।

এসব দায়িত্বে থাকার সময় আমজাদের মনে হতো দরিদ্রদের চাহিদা পূরণের জন্য বিকল্প পদ্ধতি প্রয়োজন। সে চিন্তা থেকে সিভিল সার্ভিস থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। আখুওয়াত প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে নিবেদিত হন আমজাদ।

আমজাদ সিভিল সার্ভিস থেকে পদত্যাগ করেন ২০০৩ সালে। সে বছরই আখুওয়াত প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান চালিকা শক্তি হিসেবে নিযুক্ত আছেন তিনি। ১৭ বছরের সফল কার্যক্রমের পর আখুওয়াত এখন শরিয়াহভিত্তিক ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের কার্যকর মডেলে পরিণত হয়েছে। আখুওয়াতের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যুক্ত আছেন তিনি।