পাকিস্তানে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে, চলতি সপ্তাহে মৃত্যু ৪৪

পাকিস্তানের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন মন্ত্রী আসাদ উমর
ছবি: টুইটার

৫০ দিনের মধ্যে গতকাল বুধবার পাকিস্তানের করোনাভাইরাসে সংক্রমণের হার বেড়েছে। আর চলতি সপ্তাহের প্রথম ৪ দিনে ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে কোভিড-১৯-এ।

গত আগস্ট মাসের পর করোনায় মৃত্যুর হারে এ সংখ্যাটি সর্বোচ্চ। চলতি সপ্তাহের সংক্রমণের এ হারের কারণে পাকিস্তানে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ বলে মনে করা হচ্ছে।

ডনের খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ২০ হাজার ৭০৪ জন করোনা পজিটিভ হয়েছেন। এর মধ্য ৬ হাজার ৬০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। আর দেশটিতে সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৫ হাজার ৮০ জন মানুষ।

পাকিস্তানের পরিকল্পনা ও উন্নয়নমন্ত্রী আসাদ উমর আজ বৃহস্পতিবার সকালে বলেছেন, ৫০ দিনের মধ্যে গতকাল বুধবার পাকিস্তানে সবচেয়ে বেশি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে। তিনি বলেন, এ সপ্তাহের প্রথম ৪ দিন গড়ে করোনাভাইরাসে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সংখ্যা আগস্টের পর থেকে সর্বোচ্চ। এটি আবার করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ।

পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, ‘মুজাফফারাবাদে করোনা সংক্রমণের হার অত্যন্ত বেশি।

আর করাচিতে হার আগের মতোই বেশি। লাহোর ও রাজধানী ইসলামাবাদেও হার বেড়েছে। আমাদের সবার জন্য আবার কোভিড-১৯ কে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার সময় এসেছে। আর আমরা যদি তা না করি তবে নানা বিধিনিষেধমূলক পদক্ষেপ সরকারকে নিতে হতে পারে, যা সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে আজ বৃহস্পতিবার সকাল নাগাদ করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগী ৩ কোটি ৮৪ লাখ ২৬ হাজার ৩৭৩ জন। আর বিশ্বে করোনায় মোট মারা গেছেন ১০ লাখ ৯১ হাজার ২৪৫ জন। করোনা থেকে সেরে ওঠা মানুষের সংখ্যা ২ কোটি ৬৪ লাখ ৬৬ হাজার ১৪৯।

বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৭৯ লাখ ১১ হাজার ৪৯৭। মারা গেছেন ২ লাখ ১৬ হাজার ৭৩৪ জন।

ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ভারতের অবস্থান দ্বিতীয়। ভারতে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৭২ লাখ ৩৯ হাজার ৩৮৯। দেশটিতে মারা গেছেন ১ লাখ ১০ হাজার ৫৮৬ জন। ব্রাজিল আছে তৃতীয় অবস্থানে। ব্রাজিলে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫১ লাখ ৪০ হাজার ৮৬৩ । দেশটিতে মারা গেছেন ১ লাখ ৫১ হাজার ৭৪৭ জন। তালিকায় রাশিয়ার অবস্থান চতুর্থ। আর্জেন্টিনা পঞ্চম। কলম্বিয়া ষষ্ঠ।

সপ্তম স্পেন। পেরু অষ্টম। নবম মেক্সিকো আর ফ্রান্স দশম। তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৬তম।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। চীনে করোনায় প্রথম কোনো রোগীর মৃত্যু হয় ৯ জানুয়ারি। তবে তার ঘোষণা আসে ১১ জানুয়ারি। ১৩ জানুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় থাইল্যান্ডে। পরে বিভিন্ন দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ে। করোনার প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ জানুয়ারি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ২ ফেব্রুয়ারি চীনের বাইরে করোনায় প্রথম কোনো রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ফিলিপাইনে। ১১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাস থেকে সৃষ্ট রোগের নামকরণ করে ‘কোভিড-১৯’। ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।