পাকিস্তানের রাজনীতি: ইমরানদের গণপদত্যাগের পর কী

শাহবাজ শরিফ পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজের (পিএমএল–এন) সমর্থকদের আতশবাজি উৎসব। গত সোমবার পেশোয়ারে
রয়টার্স

পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে বিদায় নিয়েছেন ইমরান খান। পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন শাহবাজ শরিফ। তবে দেশটিতে রাজনৈতিক সংকট এখনো কাটেনি। নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের সময় পার্লামেন্টের ভোটাভুটি বর্জন করেন ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সাংসদেরা। এ সময় তাঁরা পার্লামেন্ট থেকে একযোগে পদত্যাগ করারও ঘোষণা দেন। পিটিআইয়ের সাংসদদের গণপদত্যাগে দেশটিতে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক অচলায়তন আরও জোরালো হতে পারে বলে বিশ্লেষকদের অনেকের মত। খবর এক্সপ্রেস ট্রিবিউন

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পিটিআইয়ের সাংসদেরা গণপদত্যাগে বিলম্ব করতে পারেন। কেননা পাকিস্তানের আইনে পদত্যাগের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া নেই। পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব লেজিসলেটিভ ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ট্রান্সপারেন্সির (পিআইএলডিএটি) প্রেসিডেন্ট আহমেদ বিলাল মেহবুব বলেন, পার্লামেন্টের বর্তমান স্পিকার কিংবা নতুন সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত স্পিকার তাঁদের (পিটিআইয়ের সাংসদ) কাছে নিজেদের অবস্থানের ব্যাখ্যা চাইতে পারেন। তখন বিষয়টি নিষ্পত্তি হতে পারে। জানা যেতে পারে তাঁরা কবে গণপদত্যাগ করবেন, নাকি করবেন না।

ইমরান খান

যদি পিটিআইয়ের সাংসদেরা পদত্যাগপত্র জমা দেন, তখন স্পিকার প্রত্যেকের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলতে পারেন। এতেও অনেক সময় লাগবে বলে মনে করছেন আহমেদ বিলাল মেহবুব। তিনি বলেন, এরপরও সাংসদেরা নিজেদের

অবস্থানে অনড় থাকলে স্পিকার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে আইন মেনে বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানাবেন। তখন শূন্য আসনে উপনির্বাচন আয়োজন করবে কমিশন।

গণপদত্যাগের ফলে পার্লামেন্টে বিরোধী দল বলে আর কেউ থাকবে না। আহমেদ বিলাল মেহবুবের মতে, এটা গণতন্ত্রের জন্য মোটেও সুখকর নয়। যদি উপনির্বাচন আয়োজন করতেই হয়, তাতে পিটিআই অংশ নেবে কি না, সেটাও ভাবতে হবে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনকে। এ জন্য সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। আইনজীবী ইমরান শফিক বলেন, আসন শূন্য হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন আয়োজনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আর পার্লামেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে।

ইমরান খান সরকারের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, পিটিআই কোনো উপনির্বাচনে অংশ নেবে না। এমনকি স্পিকারের পক্ষ থেকে সাংসদদের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলারও প্রয়োজন নেই। একযোগে পদত্যাগ করার পরিকল্পনা পিটিআইয়ের দলীয় সিদ্ধান্ত। তবে ইমরান খান ও পিটিআই আবারও ক্ষমতায় আসবে।

পিটিআইয়ের মুখপাত্রের এমন মন্তব্য বিশ্লেষণ করে অনেকেই বলছেন, দলটি নতুন সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের কৌশল নিয়েছে। ইমরান খান পাকিস্তানে দ্রুত আগাম নির্বাচন চান। পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের এখনো ১৫ মাস বাকি রয়েছে। এর আগে ক্ষমতা হারানোর জন্য ‘বিদেশি ষড়যন্ত্রকে’ দায়ী করে স্বতন্ত্র একটি অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন ইমরান খান। এটা কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী বৈতরণি পার হতে চাইছেন তিনি।