পাকিস্তানের হাজারা নারীরা কারাতে শিখছেন যে কারণে  

আত্মরক্ষায় কারাতে শিখছেন এক হাজারা নারী
ছবি: এএফপি

দীর্ঘদিন ধরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার শিকার পাকিস্তানের সংখ্যালঘু হাজারা জাতিগোষ্ঠী। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিপীড়নের শিকার হন তাদের নারীরা। যার কারণে, আত্মরক্ষার জন্য এখন কারাতে শিখছেন তাঁরা। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, কোয়েটা শহরের দক্ষিণ-পশ্চিমে দুইটি এলাকায় বসবাসরত শিয়া মুসলিম গোষ্ঠীটি কয়েক দশক ধরে সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার হয়ে আসছে। তাদের নিরাপত্তায় এলাকা দুটিতে আলাদা চেকপোস্ট ও সশস্ত্র নিরাপত্তা বাহিনী বসানো হয়েছে।

হাজারা নারীরা সেখানে সব সময় হেনস্তার শিকার হয়ে থাকে। বিশেষ করে গণপরিবহন ও বাজারে ভিড়ের মধ্যে পুরুষদের দ্বারা তারা হেনস্তার শিকার হন। ফলে নিজেদের সুরক্ষায় কারাতে শিখছেন কয়েকশ হাজারা তরুণী।      

বার্তা সংস্থা এএফপিকে ২০ বছর বয়সী নার্গিস বাতুল বলেন, 'কারাতে দিয়ে আমরা বোমা হামলা প্রতিহত করতে পারব না কিন্তু আত্মরক্ষা করতে পারব। নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে এটি আমি শিখেছি।'

তিনি বলেন, এখানে সবাই জানে আমি কারাতে ক্লাবে যাই। ফলে আমি যখন বাইরে বের হই, আমাকে কেউ কটূক্তি করার সাহস পায় না।'
বেলুচিস্তান ওশু কুং ফু অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান ইসহাক আলী জানান, বেলুচিস্তানের ২৫টির বেশি ক্লাবের নিয়মিত ক্লাসে চার হাজারের বেশি মানুষ কারাতে শিখছে।
শহরের বড় দুইটি একাডেমি এএফপিকে জানায়, তাদের কাছে আড়াইশ জন করে মানুষ কারাতে শিখছে, যাদের মধ্যে অধিকাংশই হাজারা তরুণী।

পাকিস্তানের অনেক পরিবারে মেয়েদের খেলাধুলা করার অনুমতি দেওয়া হয় না। তবে কারাতে প্রশিক্ষক ফিদা হুসাইন কাজমি বলেন, 'আমাদের সমাজে মেয়েরা সাধারণত ক্রীড়া অনুশীলনের সুযোগ পায় না। কিন্তু আত্মরক্ষার জন্য কারাতে অনুশীলনে পরিবারগুলো তাদের বাধা দেয় না।'

গত কয়েক বছরে কয়েকশ নারীকে কারাতে শিখিয়েছেন কাজমি। লাহোরে এক চীনা প্রশিক্ষকের কাছে তিনি কারাতে প্রশিক্ষণ নেন। হাজারা নারীদের কারাতে শেখার অনুপ্রেরণায় আছেন নার্গিস হাজারা ও কুলসুম হাজারা। এ দুই নারী কারাতের আন্তর্জাতিক আসরে পাকিস্তানের হয়ে পদক জিতেছেন।