ভারতের এলাকাজুড়ে নতুন মানচিত্র তৈরি পাকিস্তানের

এবার নতুন মানচিত্র প্রকাশ করল পাকিস্তান। গত মঙ্গলবার ওই মানচিত্র অনুমোদনের কথা জানান দেশটি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ওই মানচিত্রে ভারতশাসিত কাশ্মীর, গুজরাটের জুনাগড়সহ ভারতের কিছু এলাকা পাকিস্তানের অংশ দেখানো হয়েছে। ইসলামাবাদের এই পদক্ষেপ ‘অবাস্তব’ ও ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে নয়াদিল্লি। এর আগে ভারতের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ কিছু এলাকায়  নিজেদের অংশ দেখিয়ে নতুন মানচিত্র প্রকাশ করে নেপাল।

পাকিস্তানের জিয়ো টিভির খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদের সভায় নতুন মানচিত্র অনুমোদিত হয়। ওই সভায় ভারতশাসিত মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের সর্বশেষ অবস্থা মন্ত্রিপরিষদের সদস্যকে অবহিত করা হয়। সন্ধ্যার দিকে মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদন হওয়া নতুন মানচিত্রের বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলেন ইমরান খান, যা টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ আমাদের ইতিহাসের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। আমরা বিশ্বের কাছে পাকিস্তানের নতুন রাজনৈতিক মানচিত্র প্রকাশ করছি।’

পৃথিবীর ‘ভূস্বর্গখ্যাত’ কাশ্মীরের একটি অংশ ভারতের নিয়ন্ত্রণে আর অন্যটি পাকিস্তান শাসন করে। ভারতশাসিত কাশ্মীরের জনগণ নিজেদের স্বাধীনতার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই সংগ্রাম করে আসছেন। স্বাধীনতা আন্দোলন স্তিমিত করতে ১৯৫৪ সালে ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা সংযুক্ত করে কাশ্মীরকে বিশেষ স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা দেয় তৎকালীন কংগ্রেস সরকার। কিন্তু গত বছরের ৫ আগস্ট সেই মর্যাদা রদ করে জম্মু-কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করে  বিজেপির নরেন্দ্র মোদি সরকার, যা নিয়ে দেশে-বিদেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে। 

>দুই দেশের উত্তেজনা
ইসলামাবাদের এই পদক্ষেপ 'অবাস্তব' ও 'হাস্যকর' বলে উড়িয়ে দিয়েছে ভারতের নরেন্দ্র মোদির সরকার

জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা অবলোপের সিদ্ধান্তের সমালোচনা প্রথম থেকেই করে আসছে ইসলামাবাদ। বিষয়টি জাতিসংঘেও তুলেছে পাকিস্তান। কিন্তু আন্তর্জাতিক মঞ্চে ইসলামাবাদের লাগাতার চেষ্টা তেমন ফলপ্রসূ হয়নি। পাকিস্তানের নতুন মানচিত্র প্রকাশের অনুষ্ঠানে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদের কড়া সমালোচনা করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। মোদি সরকারের ওই পদক্ষেপকে ‘অবৈধ কাজ’ বলে উল্লেখ করে ইমরান খান এ-ও জানান, নতুন মানচিত্রটি পাকিস্তানের মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। কাশ্মীরি ও পাকিস্তানের জাতীয় নেতৃত্ব এই বিষয়ে ‘সবুজ সংকেত’ দিয়েছে। স্কুল-কলেজের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখন থেকে নতুন মানচিত্র ব্যবহার করা হবে বলে জানান ইমরান খান।

নতুন মানচিত্র প্রকাশের পরপরই এর সমালোচনা করেছে ভারত। এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, পাকিস্তানের এই নতুন মানচিত্র আদতে রাজনৈতিক অবাস্তবতা। অর্থহীন। এই হাস্যকর পদক্ষেপের কোনো আইনি বৈধতা নেই।