সেনাবাহিনীর নীরবতা নিয়ে পিডিএমের সংশয়

গত ৩১ মার্চ পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান
ছবি: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত

পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্বকে আবারও অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জানিয়েছে দেশটির বিরোধী জোটের অন্যতম শরিক পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম)। দলটি বলছে, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের সঙ্গে বিদেশি ষড়যন্ত্র জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে সামরিক নেতৃত্বের নীরবতায় নিরপেক্ষতা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। খবর ডনের।

প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সভাপতি শাহবাজ শরিফের সঙ্গে গতকাল বুধবার পিডিএমের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিরোধী জোটের সভাপতি ও পিডিএম প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমান। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্ট যদি তাঁদের বিরুদ্ধে রায় দেন, তাহলে তাঁদের জনতার আদালতে যাওয়ার অধিকার আছে।

মাওলানা ফজলুর রহমান বলেন, গত ৩১ মার্চ জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) বৈঠকে উপস্থিত সামরিক বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান স্পষ্ট করতে তিনি আহ্বান জানিয়েছেন। শাহবাজ শরিফ ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিও একই আহ্বান জানিয়েছেন।

পিডিএম প্রধান বলেন, তাঁরা ডেপুটি স্পিকারের অসাংবিধানিক সিদ্ধান্ত কখনো মেনে নেবেন না। দেশকে অরাজক পরিস্থিতি থেকে বাঁচাতে যৌথবিরোধী জোট প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে তিনি বলেন, পিটিআই যদি সংঘাত চায় তাঁরাও প্রস্তুত আছেন। মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের দীর্ঘসূত্রতা যাঁরা সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন, তাঁদের উৎসাহিত করছে।

মাওলানা ফজলুর রহমান কাল শুক্রবার দেশের সংবিধান রক্ষা দিবস পালনে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। জুমার খুতবায় পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সরকারের সংবিধান লঙ্ঘনের বিষয়টি জনগণের কাছে তুলে ধরতে তিনি ইমাম ও উলামাদের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন।

বিরোধী জোটের সভাপতি বলেন, দেশে সহিংসতা ও অরাজক অবস্থা সৃষ্টিতে পিটিআই ও দলটির নেতা–কর্মীরা বিরোধী নেতা-কর্মীদের উসকানি দেওয়ার চেষ্টা করছেন। পিটিআই সরকারের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে জনগণকে রাজপথে নামারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

মাওলানা ফজলুর রহমান বলেন, ৩ এপ্রিল জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরির বিতর্কিত সিদ্ধান্তে দেশে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হয়েছে এবং বর্তমানে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার ঘটনা আরও মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

বিরোধী জোটের সভাপতি বলেন, নতুন সরকারের দায়িত্ব হলো নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা। পিটিআইয়ের সাজানো প্রশাসনের অধীন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, জাতীয় নেতাদের বিশ্বাসঘাতক ঘোষণা করা হাস্যরসের কিছু নয়, এটা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের অবমাননা।

প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা বিরোধী দলগুলোর অনাস্থা প্রস্তাব ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে ৩ এপ্রিল খারিজ করে দেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার। এরপরই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। পুরো প্রক্রিয়াটিকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বিরোধীরা। আজ বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে আদেশ দিতে পারেন সর্বোচ্চ আদালত।