হাসপাতালগুলো করোনা রোগীতে ভরে যাচ্ছে: ইমরান খান

ইমরান খান
ছবি: রয়টার্স

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, করোনা রোগীতে তাঁর দেশের হাসপাতালগুলো ভরে উঠছে। তাই তিনি মানুষের জীবন বাঁচাতে দেশটির বিরোধী দলগুলোকে শোভাযাত্রার মতো কর্মসূচি না করার আহ্বান জানিয়েছেন। পাকিস্তানের ডন অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় গতকাল বুধবার বিরোধী দলগুলোর কাছে শোভাযাত্রা বন্ধের আহ্বান করেন ইমরান খান।

টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুলতানে করোনা রোগীর জন্য বরাদ্দ ৬৪ শতাংশ শয্যা ভরে গেছে। গত ১ নভেম্বর সেখানে পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) একটি শোভাযাত্রার আয়োজন করেছিল।

ইমরান বলেন, ‘মানুষ যখন এক জায়গায় জড়ো হয়, তখন ভাইরাসটি ছড়ায়। এর সময়সীমা বিশেষ করে ১ সপ্তাহ বা ১০ দিন পরে থেকে হাসপাতালে রোগী বাড়তে দেখা যায়।’

পেশোয়ারে করোনা রোগীর জন্য বরাদ্দ করা ৪০ শতাংশ হাসপাতালের শয্যা ভরে গেছে বলেও জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ১১ দলীয় জোট ২২ নভেম্বর একটি গণসমাবেশ করেছিল।

ইসলামাবাদে ৫০ শতাংশ শয্যা করোনার রোগীদের দখলে চলে গেছে। পাকিস্তানে কোভিড-১৯ রোগীর শয্যার জাতীয় গড় ৪০ শতাংশ বর্তমানে পূর্ণ হয়ে গেছে। এর অর্থ হচ্ছে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়ছে।

শীতের প্রকোপ বাড়তে থাকলে ভাইরাসের বিস্তার রোধ করা আরও কঠিন হয়ে উঠবে। দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় বর্তমান হারে সংক্রমণ বাড়তে থাকলে হাসপাতালগুলো ভরে উঠবে।
ইমরান খান, প্রধানমন্ত্রী, পাকিস্তান

ইরমান বলেছেন, শীতের প্রকোপ বাড়তে থাকলে ভাইরাসের বিস্তার রোধ করা আরও কঠিন হয়ে উঠবে। দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় বর্তমান হারে সংক্রমণ বাড়তে থাকলে হাসপাতালগুলো ভরে উঠবে। তাই এখনই পুরো পাকিস্তানবাসীকে আগাম সতর্ক থাকতে হবে ও বিধিনিষেধ মানতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে মুখ ঢাকার বিষয়টি।

ইমরান খান সবাইকে মাস্ক পরার আহ্বান জানান। এ ছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোকে সমাবেশ করার ব্যাপারে আবার চিন্তা করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এ সমাবেশ এবং বিক্ষোভ সরকারে কোনো প্রভাব ফেলবে না, তবে জনগণের জীবনে বিপদ ডেকে আনবে। আমাদের চেয়ে বড় শোভাযাত্রা কে করতে পারবে? তারা কি সমাবেশ করতে সরকার পতন করতে পারবে? সমাবেশ করলে মানুষ কাছাকাছি আসবে, এতে ভাইরাস বিস্তারের আশঙ্কা বাড়বে।’

এর আগে গত বুধবার পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের প্রধান ফজলুর রহমানের সমালোচনা করে ইমরান খান বলেন, বিরোধীদের যদি সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানাতে হয়, তবে তাদের অবশ্যই অ্যাসেম্বলিতে এসে তা করতে হবে। দেশকে একাধিক সংকটের হাত থেকে বাঁচাতে তিনি জাতীয় সংলাপে পিছু হটবেন না।

দেশকে সংকট থেকে মুক্ত করার বিষয়টি সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন ইমরান। এ ছাড়া প্রতিটি ক্ষেত্রে ঘাটতি তাঁর সরকার উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে। তিনি বলেছেন, যখনই বিরোধী দলের সঙ্গে তাঁর সরকার আলোচনায় বসে, তখনই তারা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে নেওয়ার কথা বলে। কিন্তু এসব মামলা তাদের নিজের শাসনামলেই দায়ের করা হয়েছিল।

ইমরান বলেছেন, ‘আমাদের কোনো সমস্যা নেই এবং সরকার যেকোনো বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত। তবে দুর্নীতির কোনো মামলা প্রত্যাহার করা হবে না।’