৩০০ রুপি জরিমানা এড়াতে খরচ ৩৫ হাজার

প্রতীকী ছবি
ছবি : রয়টার্স

ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করলে পুলিশ মামলা দিতেই পারে। জরিমানার ঘটনাও স্বাভাবিক। কিন্তু পাকিস্তানের মোহাম্মদ নোমান আওয়ান জরিমানার পর যা করলেন, তা বিস্ময়কর বটে!

পাঞ্জাব প্রদেশের চাকওয়াল জেলার বাসিন্দা নোমান। ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ট্রাফিক পুলিশ তাঁর ৩০০ রুপি জরিমানা করে। নোমান এই জরিমানা ঠেকাতে এ পর্যন্ত ৩৫ হাজার রুপি খরচ করে ফেলেছেন।

গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাড়িতে নকল নম্বরপ্লেট ব্যবহারের অভিযোগে পাকিস্তানের ন্যাশনাল হাইওয়ে অ্যান্ড মোটরওয়ে পুলিশ (এনএইচএমপি) নোমানের ৩০০ রুপি জরিমানা করে। এ জরিমানা থেকে মুক্তি পেতে নোমান আদালতের দ্বারস্থ হন। আইনজীবীর ফি, যাতায়াত ও আদালতে রিট করতে প্রয়োজনীয় ফি জমা দিয়ে রিট করতে তাঁর খরচ হয়ে গেছে ৩৫ হাজার রুপি। তবু তিনি পিছু হাঁটেননি। রিটে তিনি ইসলামাবাদ হাইকোর্টে তাঁর বিরুদ্ধে আনা জরিমানার অভিযোগ তুলে নেওয়ার আরজি জানিয়েছেন। ওই রিটে তিনি এনএইচএমপির আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন।

নোমানের সঙ্গে ঘটনাটি ঘটে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি। এনএইচএমপির একজন কর্মকর্তা ওই দিন বালকাসার ইন্টারচেঞ্জ থেকে লাহোর-ইসলামাবাদ পথে যাওয়ার সময় নোমানের গাড়ি আটকান। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় মোটরওয়ের কর্মকর্তা বলেন, নোমান তাঁর গাড়িতে বিশেষ নম্বরপ্লেট ব্যবহার করছেন না। কিন্তু ওই সময় পুলিশের ওই কর্মকর্তা নোমানের গাড়িতে থাকা নম্বরপ্লেট কী কারণে অপরাধের পর্যায়ে পড়েছে, তার কোনো নির্দিষ্ট আইন দেখাতে পারেননি।

এ মামলার আইনজীবী সাদ বিন সাফদার বলেন, এটা আসলে ৩০০ রুপির জরিমানার বিষয় নয়। কিন্তু এটি আইনের একটি বিশেষ প্রশ্নের উত্তর জড়িত। বাদী এখানে হাইকোর্টের কাছে এনএইচএমপির ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছেন। সাফদার আরও বলেন, মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৫৬-এর অধীনে কেবল মোটর যানবাহন নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট রেজিস্ট্রেশন নম্বরপ্লেট দেয়, যা কম্পিউটারাইজড এবং একই আকার ও আকৃতির। পাঞ্জাবে চালকদের জন্য তাঁদের গাড়িতে এই নম্বরপ্লেট ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু মোটরওয়ে ফেডারেল সরকারের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে, তাই পাঞ্জাবের নিয়ম সেখানে খাটে না।

আইনজীবী সাফদার আরও বলেন, পাকিস্তানে ফৌজদারি আইনের মূলনীতি অনুযায়ী, কোনো আচরণকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যাবে না, যদি এটি কোনো শাস্তিমূলক আইনকে বর্ণনামূলক সংবিধিবদ্ধ পাঠ্য আকারে বর্ণনা না করা হয়।

দেশটির জাতীয় মহাসড়ক ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০০০ অনুযায়ী, এমন কোনো বিধান নেই যেখানে এ ধরনের নম্বরপ্লেট অসংগতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বিচারক বাবর সাত্তার বাদীর বক্তব্য শোনার পর এনএইচএমপির ইন্সপেক্টর জেনারেলকে নোটিশ পাঠিয়ে ২৯ এপ্রিলের মধ্যে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে বলেছেন।