করোনায় ৩৩ কোটি আয়ুষ্কাল বছর হারিয়ে গেছে

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
ফাইল ছবি: রয়টার্স

কোভিড-১৯ মহামারির প্রথম দুই বছরে বিশ্বে লাখো মানুষ অকালে প্রাণ হারিয়েছেন। আর এতে সামষ্টিক জীবন আয়ুষ্কাল প্রায় ৩৩ কোটি ৭০ লাখ বছর কমে গেছে। আজ শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আন্তর্জাতিক বার্ষিক পরিসংখ্যান-সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

ডব্লিউএইচও বলছে, ২০২২ সাল পর্যন্ত করোনা মহামারির তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশিত এ বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, হৃদ্‌রোগ, ক্যানসার ও ডায়াবেটিসের মতো অসংক্রামক ব্যাধিতেও মৃত্যুঝুঁকি বাড়ছে।

বিভিন্ন দেশের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা দুই কোটির কাছাকাছি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

করোনাভাইরাস সরাসরি এবং পরবর্তীকালে মানুষের শরীরে বড় আকারে প্রভাব ফেলার কারণে কীভাবে লাখো মানুষের আয়ুষ্কাল কমে গেছে, তার ওপর ডব্লিউএইচওর প্রতিবেদনে আলোকপাত করা হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনায় ৫৪ লাখ মানুষের নিশ্চিত মৃত্যুর তথ্য নথিভুক্ত করেছে। তবে সম্ভাব্য মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে তারা যে পরিসংখ্যান করে থাকে, তাতে বলা হয়েছে, করোনায় প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা ১ কোটি ৪৯ লাখ হতে পারে।

গত দুই দশকে বিশ্বে মাতৃস্বাস্থ্য ও শিশুস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে উল্লেখজনক অগ্রগতি হতে দেখা গিয়েছিল। মাতৃমৃত্যুর হার এক-তৃতীয়াংশ এবং শিশুমৃত্যু ৫০ শতাংশ কমেছে। এইচআইভি, যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়ার মতো সংক্রামক রোগগুলোতে আক্রান্তের হারও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে বিশ্বের মানুষের গড় আয়ু ৬৭ বছর থেকে বেড়ে ৭৩ বছর হয়েছে।

তবে করোনা মহামারির পর উচ্চ মানসম্পন্ন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অসাম্যসহ নানা কারণে ম্যালেরিয়া ও যক্ষ্মার ক্ষেত্রে অগ্রগতির প্রবণতা ভিন্ন দিকে মোড় নিয়েছে।

ডব্লিউএইচওর পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, শুধু দুই বছরে করোনা মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে ৩৩ কোটি ৬৮ লাখ আয়ুষ্কাল বছর হারিয়ে গেছে। অর্থাৎ করোনায় যত মানুষের অকাল মৃত্যু হয়েছে, তাঁরা সবাই বেঁচে থাকলে মোট ৩৩ কোটি ৬৮ লাখ আয়ুষ্কাল বছর বেশি হতো।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহকারী প্রধান সামিরা আসমা বলেছেন, প্রতিটি মৃত্যুর ক্ষেত্রে গড়ে ২২ বছর করে জীবনবর্ষ নষ্ট হয়েছে।

ডব্লিউএইচওর প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।