জনসংখ্যা অনুপাতে করোনায় মৃত্যুহারে শীর্ষে পেরু

পেরুর একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে করোনা রোগীকে সেবা দেওয়া হচ্ছে
ছবি: এএফপি

লাতিন আমেরিকার দেশ পেরুতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়েছে। পেরুতে এখন প্রতি ১০ লাখে ৬ হাজার ৬৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন। জনসংখ্যা অনুপাতে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুহারের দিক থেকে বিশ্বে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে পেরু। খবর এএফপির।

২০২০ সালের মার্চ থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই লাখ তিনজনে। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এসব তথ্য জানিয়েছে। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৩ কোটি ৩০ লাখ জনসংখ্যার দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া মানুষের সংখ্যা ২২ লাখ।

করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মৃতের সংখ্যা দুই লাখ ছাড়ানোর তথ্য এমন সময়ে সামনে এল, যখন কিনা দেশটিতে দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমছে।

জোরেশোরে টিকা কর্মসূচি চালানোর পর এই হার নিম্নমুখী হয়েছে। তবে করোনার ডেলটা ধরনের কারণে সংক্রমণের নতুন ঢেউ দেখা যাওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।

পেরুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী হেরনান্দু সেভালুস সম্প্রতি বলেন, ‘আমরা কঠোর নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছি।’

তবে তাঁর আশা, টিকা কর্মসূচির পাশাপাশি করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে যাঁরা সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে থাকতে পারে।
সংক্রমণ কমে যাওয়ার পর কিছু স্বাস্থ্য সুরক্ষাব্যবস্থা শিথিল করেছে পেরু সরকার। দেশের অর্থনীতিও আংশিকভাবে সচল করা হয়। রাত্রিকালীন কারফিউয়ের সময় কমিয়ে মাত্র দুই ঘণ্টা করা হয়। রেস্তোরাঁগুলোও পুরোদমে কাজ চালানোর অনুমতি পেয়েছে।

লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে ব্রাজিল ও মেক্সিকোতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেশি। তবে দেশগুলোর জনসংখ্যার তুলনায় মৃতের হার কম। পেরুর চেয়ে ব্রাজিলের জনসংখ্যা প্রায় সাত গুণ এবং মেক্সিকোর জনসংখ্যা চার গুণ।

মহামারির আগে লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে অর্থনৈতিক গতিশীল দেশগুলোর একটি ছিল পেরু। তবে ২০২০ সালে দেশটির জিডিপি ১১ শতাংশ কমে গেছে। অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হওয়ায় ২১ লাখেরও বেশি মানুষ চাকরি হারিয়েছে।

গত এপ্রিল থেকে পেরুতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা কমতে শুরু করে। তখন সপ্তাহে ২ হাজার ৫০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে সরকারি হিসাবে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে সেই সংখ্যা কমে ১৬৯-এ নেমে এসেছে।

পেরু সরকার আশা করছে, এ বছরের শেষ নাগাদ ১২ বছরের বেশি বয়সী ৭০ ভাগ মানুষকে টিকা দেওয়া শেষ করতে পারবে তারা। এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৪২ লাখের বেশি মানুষকে দুই ডোজ টিকা দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। এ সংখ্যা ১২ বছরের বেশি বয়সী জনসংখ্যার ৫১ শতাংশ।