ভেনেজুয়েলায় সোনার খনিতে ধস, ২৩ জনের মৃত্যু
ভেনেজুয়েলার দক্ষিণাঞ্চলীয় জঙ্গলে একটি অবৈধ সোনার খনিতে ধসের ঘটনায় ২০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার স্থানীয় কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। খনিতে আর কেউ জীবিত আটকে পড়ে আছেন কি না, তা নিশ্চিত হতে অভিযান চলছে।
গত মঙ্গলবার ভেনেজুয়েলার বলিভার রাজ্যের ‘বুল্লা লোকা’ খনিতে এ ঘটনা ঘটে। সবচেয়ে কাছের শহর লা প্যারাগুয়া থেকে ওই এলাকায় নৌকায় করে যেতে সাত ঘণ্টার মতো সময় লাগে। ওই কয়লা খনিতে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের পরিবারের সদস্যরা লা প্যারাগুয়ায় অপেক্ষায় আছেন।
বুধবার রাতে অ্যাঙ্গোস্তুরা পৌরসভার মেয়র ইয়োর্জি আর্চিনিয়েগা এএফপিকে বলেন, ২৩টির মতো মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি লাশ নৌকায় করে লা প্যারাগুয়ায় পৌঁছেছে। আরও আটটি লাশ সেখানে নেওয়া হচ্ছে।
ব্রাজিলের নাগরিক সুরক্ষাবিষয়ক উপমন্ত্রী কার্লোস পেরেজ অ্যাম্পুয়েদা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ঘটনাটির একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। সেখানে বলেছেন, অনেকে হতাহত হয়েছেন। তবে তিনি কোনো সংখ্যা উল্লেখ করেননি। কর্মকর্তাদের ধারণা, ঘটনার সময় খনিটিতে প্রায় ২০০ শ্রমিক কাজ করছিলেন।
ভিডিওটিতে দেখা গেছে, কয়েক ব্যক্তি খনির অগভীর পানিতে কাজ করার সময় হঠাৎই তাঁদের ওপর একটি মাটির দেয়াল ধসে পড়ে। কেউ কেউ পালাতে সক্ষম হলেও অনেকে চাপা পড়েন।
বলিভার রাজ্যের নাগরিক নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী এদগার কোলিনা রেয়েস বলেন, আহত শ্রমিকদের লা প্যারাগুয়া থেকে চার ঘণ্টা দূরে ওই অঞ্চলের প্রধান শহর সিউদাদ বলিভারের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এদিকে খনিশ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা স্বজনদের খোঁজ পাওয়ার জন্য উপকূলে অপেক্ষায় আছেন। নৌকা থেকে একটি লাশ নামানোর সময় তাঁদেরই একজন ‘আমার ভাই, আমার ভাই, আমার ভাই’ বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
বাসিন্দা রবিনসন বাসান্তা মনে করেন, খনিশ্রমিকেরা যেভাবে অনিরাপদ পরিবেশে কাজ করেন, তাতে এ ধরনের ঘটনা ঘটা অস্বাভাবিক ছিল না।
বলিভার অঞ্চলটি সোনা, হীরা, লোহা, বক্সাইট, কোয়ার্টজ ও কোল্টানে সমৃদ্ধ। রাষ্ট্রীয়ভাবে পরিচালিত খনি ছাড়াও সেখানে অবৈধভাবেও খনি থেকে উত্তোলনের কার্যক্রম চলে।
গত বছরের ডিসেম্বরে একই অঞ্চলের একটি খনিতে ধসের ঘটনায় অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়।
গত বছর ভেনেজুয়েলার সশস্ত্র বাহিনী প্রতিবেশী আমাজোনাস রাজ্যের ইয়াপাকানা ন্যাশনাল পার্ক থেকে প্রায় ১৪ হাজার অবৈধ খনিশ্রমিককে উচ্ছেদ করে।