বিপ্লবী চে গুয়েভারাকে আটক করা বলিভিয়ার জেনারেলের মৃত্যু

গ্যারি প্রাডো সালমন
ফাইল ছবি: এএফপি

বলিভিয়ার সাবেক জেনারেল গ্যারি প্রাডো সালমন গত শনিবার মারা গেছেন। এই জেনারেল ১৯৬৭ সালে বিপ্লবী আর্নেস্তো চে গুয়েভারাকে আটক করেছিলেন। তাঁর ছেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর বাবার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।

গ্যারি প্রাডো সালমনের বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। চে গুয়েভারাকে আটক করে বলিভিয়ার তৎকালীন সামরিক সরকারকে রক্ষার জন্য গ্যারিকে জাতীয় বীর বানানো হয়েছিল।

গত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি থেকে নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন গ্যারি প্রাডো সালমন। হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল।

আরও পড়ুন

১৯৬৭ সালে গ্যারির নেতৃত্বে বলিভিয়ায় পরিচালিত এক সেনা অভিযানে চে গুয়েভারা আটক হন। এ অভিযানে মার্কিন গোয়েন্দারা সহায়তা করেছিলেন। এই অভিযানের মধ্য দিয়ে বলিভিয়ায় চে গুয়েভারার নেতৃত্বে সংগঠিত কমিউনিস্ট বিপ্লবী তৎপরতার অবসান ঘটেছিল।

সে সময় বলিভিয়ার ক্ষমতায় ছিল ডানপন্থী সামরিক সরকার। আটকের এক দিন পর চে গুয়েভারাকে বলিভিয়ার এক সেনা কর্মকর্তা হত্যা করেন।

তখন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে শীতল যুদ্ধ তুঙ্গে ছিল। চে গুয়েভারার বিপ্লবী কার্যকলাপসহ লাতিন আমেরিকায় কমিউনিস্ট প্রভাব নিয়ে সে সময় ওয়াশিংটন বেশ উদ্বিগ্ন ছিল।

আরও পড়ুন
চে গুয়েভারা
ফাইল ছবি: এএফপি

চে গুয়েভারার জন্ম আর্জেন্টিনায়। তরুণ বয়সেই তিনি বিপ্লবে অংশ নিতে দেশ ছেড়েছিলেন। ১৯৫৯ সালে কিউবায় সফল বিপ্লবের পর সে দেশ ত্যাগ করেন তিনি। কিউবার পর অন্য দেশে বিপ্লব সংগঠিত করার ব্রত ছিল তাঁর।

কিউবার কমিউনিস্ট নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন চে গুয়েভারা। কিউবায় বিপ্লবের পর তিনি বিশ্বব্যাপী কমিউনিস্টদের নায়ক হয়ে ওঠেন।

চে গুয়েভারাকে আটক করা বলিভিয়ার জেনারেল গ্যারির ছেলে তাঁর বাবাকে একজন ‘অসাধারণ ব্যক্তি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ছেলের ভাষ্যে, তিনি প্রেম, সততা ও সাহসের উত্তরাধিকার রেখে গেছেন।

আরও পড়ুন

১৯৮১ সাল থেকে জেনারেল গ্যারি হুইলচেয়ারে চলাফেরা করে আসছিলেন। কারণ, তিনি দুর্ঘটনাক্রমে গুলিতে আহত হয়েছিলেন। তাঁর মেরুদণ্ডে গুলি লেগেছিল। তিনি তাঁর ১৯৬৭ সালের অভিযান নিয়ে একটি বই লিখেছিলেন। বইটির নাম ‘হাউ আই ক্যাপচারড চে’।

বলিভিয়ার রাজধানী লাপাজ থেকে ৮৩০ কিলোমিটার (৫১৬ মাইল) দক্ষিণে হিগুয়েরা গ্রামে চে গুয়েভারাকে হত্যা করা হয় এবং তাঁর মরদেহ গোপন স্থানে সমাহিত করা হয়। ১৯৯৭ সালে তাঁর সমাধিস্থল সম্পর্কে জানা যায়। সেখান থেকে তাঁর দেহাবশেষ কিউবায় ফিরিয়ে নিয়ে আবার সমাহিত করা হয়। যে সেনা কর্মকর্তা চে গুয়েভারাকে গুলি করে হত্যা করেছিলেন, তাঁর নাম মারিও তেরান। তিনি গত বছর মারা গেছেন।

আরও পড়ুন