হাইতির প্রধান কারাগারে পড়ে আছে ১২টি মরদেহ, পালিয়েছেন প্রায় ৪ হাজার বন্দী

হাইতির প্রেসিডেন্টের বাসভবন থেকে কয়েক শ মিটার দূরে কারাগারটির অবস্থানছবি: রয়টার্স

হাইতির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের প্রধান কারাগারে গ্যাং সদস্যদের হামলায় কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছেন। জেল থেকে পালিয়ে গেছেন কয়েক হাজার কয়েদি। রোববার এএফপির এক প্রতিনিধি এবং বেসরকারি সংস্থা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

হাইতির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স শহরের একটা বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ করে সশস্ত্র গ্যাংগুলো। গত বৃহস্পতিবার থেকে সেখানে নতুন করে সহিংসতা শুরু হয়। গত শনিবার রাতে শহরের প্রধান কারাগারে হামলা চালায় গ্যাং সদস্যরা।

গ্যাংগুলো বলছে, তারা হাইতির প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরিকে উৎখাত করতে চায়। ২০২১ সালে হাইতির প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মইসি হত্যার শিকার হওয়ার পর থেকে হেনরি ক্ষমতায় আছেন।

মানবাধিকারবিষয়ক সংগঠন ন্যাশনাল নেটওয়ার্ক ফর ডিফেন্স অব হিউম্যান রাইটসের পিয়েরে এসপারেন্স বলেন, ন্যাশনাল পেনিটেনশিয়ারি নামের কারাগারটিতে ৩ হাজার ৮০০ জন বন্দী ছিলেন। এর মধ্যে প্রায় ১০০ জন এখনো কারাগারের ভেতরে আছেন।  

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অনেক কারাবন্দীর মরদেহ গুনেছি।’

এএফপির প্রতিনিধি রোববার কারাগারটি পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখতে পান বাইরে ১২টির মতো মরদেহ পড়ে আছে। এগুলোর কোনোটিতে বুলেটের আঘাতের চিহ্ন, আবার কোনোটিতে গোলার আঘাতের চিহ্ন ছিল।  

এএফপির প্রতিনিধি নিজে নিজেই কারাগারে ঢুকেছিলেন। কারা ফটকটি খোলা ছিল। সেখানে ঢুকে তিনি দেখতে পান ভেতরে কেউ নেই বললেই চলে।

স্থানীয় এক সাংবাদিকের বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কারাগারটিতে প্রায় চার হাজার বন্দী ছিলেন। তাঁদের বেশির ভাগই পালিয়েছেন।

হাইতির সরকারের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, কারাগারে হামলা ঠেকানোর চেষ্টা করা হয়েছিল।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ হামলার ঘটনায় কারাগারের কর্মী, বন্দীসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

হাইতির দৈনিক লে নোভেলিস্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মইসিকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত গ্যাং নেতাসহ অন্য আসামিদের প্রধান কারাগারে রাখা হয়েছিল। হাইতির প্রেসিডেন্টের বাসভবন থেকে কয়েক শ মিটার দূরে কারাগারটির অবস্থান। দুর্বৃত্তরা ড্রোন ব্যবহার করে গত বৃহস্পতিবার থেকে কারাগারটির ওপর নজর রাখছিল। আর শনিবার দিবাগত রাতে সেখানে হামলা চালানো হয়।

ন্যাশনাল নেটওয়ার্ক ফর ডিফেন্স অব হিউম্যান রাইটসের পিয়েরে এসপারেন্স বলেছেন, আরও একটি কারাগারেও হামলা হয়েছে। সেখানে ১ হাজার ৪৫০ জন বন্দী ছিলেন। তবে সেখান থেকে কতজন পালিয়েছেন তা জানা যায়নি।

২০১৬ সাল থেকে হাইতিতে কোনো নির্বাচন হয়নি। সেখানকার প্রেসিডেন্ট পদটি ফাঁকা। একটি রাজনৈতিক চুক্তি মেনে বিক্ষোভকারীরা হেনরির পদত্যাগ দাবি করেছেন। ওই চুক্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হয়ে নতুন নির্বাচিত কর্মকর্তাদের দায়িত্ব নেওয়ার কথা ছিল।