চিলির স্বৈরশাসক পিনোশের আমলে নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে উদ্যোগ

চিলির স্বৈরশাসক জেনারেল অগাস্তো পিনোশের আমলে নিখোঁজ ব্যক্তিদের ছবি
ফাইল ছবি: রয়টার্স

চিলির স্বৈরশাসক জেনারেল অগাস্তো পিনোশের আমলে নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে একটি উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার।

১৯৭৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে চিলির ক্ষমতা দখল করেছিলেন পিনোশে। এই অভ্যুত্থানের ৫০তম বার্ষিকীর আগে নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানের উদ্যোগ নিল চিলির বর্তমান সরকার।

দেশটির প্রগতিশীল প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বোরিক গতকাল বুধবার এ-সংক্রান্ত ‘জাতীয় অনুসন্ধান পরিকল্পনা’ ঘোষণা করেন।

চিলির প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বোরিক
ফাইল ছবি: রয়টার্স

বোরিক বলেন, পিনোশের আমলে নিখোঁজ ব্যক্তিদের ভাগ্যে কী ঘটেছিল, সে সম্পর্কে উত্তর জানার অধিকার তাঁর দেশের জনগণের রয়েছে।

গতকাল ৩০ আগস্ট ছিল ‘গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস’। কাকতালীয়ভাবে এই দিবসটিতেই পিনোশের আমলে নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানের উদ্যোগের ঘোষণা দেশটির প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে এল।

চিলির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত বামপন্থী প্রেসিডেন্ট সালভাদর আলেন্দেকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করেছিলেন পিনোশে। এই অভ্যুত্থানে চিলির প্রথম কমিউনিস্ট প্রেসিডেন্ট আলেন্দে নিহত হন।

পিনোশের ১৭ বছরের শাসনামলে গুমের ঘটনায় ১ হাজার ৪৬৯ ব্যক্তি নিখোঁজ হন। এই ব্যক্তিদের মধ্যে ১ হাজার ৯২ জন বন্দী হওয়ার পর নিখোঁজ হন। আর ৩৭৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। কিন্তু তাঁদের মরদেহ বা দেহাবশেষ স্বজনদের দেওয়া হয়নি।

জেনারেল অগাস্তো পিনোশে
ফাইল ছবি: রয়টার্স

নিখোঁজ থাকা এক ব্যক্তির বন্ধু জুয়ানা আন্দ্রেয়ানি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের বিভ্রম ছিল যে তাঁরা বেঁচে আছেন। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে আমরা বুঝতে পেরেছি, তাঁরা বেঁচে নেই।’

সাবেক বন্দী আন্দ্রেয়ানি আরও বলেন, নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিণতি কী হয়েছিল, সে কথা কর্তৃপক্ষের বলা উচিত।

স্নায়ুযুদ্ধের সময় লাতিন আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত ধারাবাহিক সামরিক অভ্যুত্থানের জেরে চিলিতে পিনোশের সামরিক শাসন এসেছিল।

চিলির রাজধানী সান্তিয়াগো থেকে আল-জাজিরার সাংবাদিক লুসিয়া নিউম্যান বলেন, ১৯৯০ সালে পিনোশের ক্ষমতা ছাড়ার পর থেকে দেশটিতে আসা সরকারগুলো নিখোঁজ ব্যক্তিদের গুরুত্বের সঙ্গে সন্ধানে ব্যর্থ হয়েছে।

আরও পড়ুন

প্রেসিডেন্ট বোরিক গতকাল বলেন, ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য অনেক সময় চলে গেছে। উদ্যোগটি ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর প্রতি সরকারের কোনো অনুগ্রহ নয়। নিখোঁজ ব্যক্তিদের ব্যাপারে উত্তর দেওয়াটা সামগ্রিকভাবে সমাজের প্রতি রাষ্ট্রের কর্তব্য।

নিখোঁজ ব্যক্তিদের ব্যাপারে আরও তথ্য প্রকাশের জন্য চিলির সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বজনেরা।