হারিয়ে গেল ভেনেজুয়েলার শেষ হিমবাহ

হামবোল্ট হিমবাহ
ছবি : রয়টার্স

ভেনেজুয়েলায় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে পাঁচ হাজার মিটার উঁচু সিয়েরা নেভাদা দা মেরিদা পর্বতমালায় একসময় ছয়টি হিমবাহ ছিল। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ২০১১ সালের আগেই পাঁচটি হিমবাহ গলে যায়। সেখানে দেশটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বত পিকো হামবোল্টের কাছে অবশিষ্ট হামবোল্ট নামে আরেকটি হিমবাহও হারিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা বলছেন, হামবোল্ট ধারণার চেয়ে বেশি দ্রুত গলেছে। ফলে একে আর হিমবাহ বলা যায় না। এটি এখন কেবল দুই হেক্টর জায়গাজুড়ে একটি বরফের ক্ষেত্র হয়ে গেছে।

হামবোল্ট নামে এই হিমবাহকে বিজ্ঞানীরা লা করোনা নামেও ডাকেন। তাঁদের ধারণা ছিল, আরও কয়েক দশক লা করোনা টিকে থাকবে। কিন্তু দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বিজ্ঞানীরা ওই হিমবাহকে ঠিকমতো পর্যবেক্ষণ করতে পারেননি। সম্প্রতি তাঁদের নতুন পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, হিমবাহটি এত দ্রুত গলে গেছে যে সেখানে মাত্র দুই হেক্টর জায়গায় বরফ রয়েছে। ফলে এটি আর হিমবাহের মর্যাদা পাচ্ছে না।

জলবায়ুবিজ্ঞানী ম্যাক্সিমিলিয়ানো হেরেইরা বলেন, অন্য দেশগুলো কয়েক দশক আগেই হিমবাহ হারিয়েছে। কিন্তু আধুনিক কালের মধ্যে ভেনেজুয়েলা সম্ভবত একমাত্র দেশ হিসেবে তাদের সব হিমবাহ খোয়াল। হেরেইরার মতে, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো ও স্লোভেনিয়াও শিগগিরই তাদের হিমবাহগুলো হারাবে। ইন্দোনেশিয়ার পাপুয়া দ্বীপ ও মেক্সিকোতে সম্প্রতি ব্যাপক তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। এতে হিমবাহ গলার হার বেড়েছে।

বর্তমানে বিশ্ব এল নিনো নামে বিশেষ প্রাকৃতিক ঘটনার সম্মুখীন। এল নিনো এমন এক প্রাকৃতিক ঘটনা, যা প্রতি দুই থেকে সাত বছর অন্তর ঘটে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এল নিনোর কারণে মানবসৃষ্ট বৈশ্বিক উষ্ণতা অস্থায়ীভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ক্রান্তীয় হিমবাহগুলো গলে যাওয়ার হার বেড়ে যেতে পারে। হেরেইরা বলেন, ভেনেজুয়েলার আন্দিয়ান এলাকায় ১৯৯১ থেকে ২০২০ সালের গড়ের তুলনায় কয়েক মাসে তাপমাত্রার ৩ থেকে ৪ ডিগ্রি তারতম্য দেখা গেছে।

আরেক পরিবেশবিজ্ঞানী লুইস দানিয়েল লাম্বি বলেন, উত্তর থেকে দক্ষিণে যা ঘটতে যাচ্ছে, তার একটি আয়না হচ্ছে ভেনেজুয়েলা। প্রথমে কলম্বিয়া ও ইকুয়েডর থেকে শুরু হয়ে পরে তা পেরু ও বলিভিয়া পর্যন্ত ঘটতে দেখা যাবে। এতে আন্দিজ পর্বতমালা থেকে হিমবাহগুলো গলে যাবে।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন